কলকাতা

প্রধানমন্ত্রী মিথ্যে বলছেন! ‘ফ্যাক্ট চেক’ করে তথ্য দিয়ে জবাব ডেরেকের

মমতা নাকি দুর্গা পুজোয় মানুষকে অনুমতি দেয় নি। সোমবার হুগলির ডানলপ ময়দান থেকে আবারও মমতা সরকারের বিরুদ্ধে এমনই নানা অভিযোগ এনেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে তাঁর মন্তব্যের জবাব দিয়ে ”ফ্যাক্ট চেকড” টুইট করেছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রীতিমতো পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যে খণ্ডন করেছেন তিনি। ভোটের আর মাত্র কিছুদিন বাকি । তার আগে সোমবার বঙ্গ সফরে এসে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি নির্বাচনী সভাও সারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । তিনি তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেন, মানুষ এ বার পরিবর্তনের ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন । বাংলা উন্নয়নে অনুমতি দেয়নি, মোদির এই অভিযোগ খণ্ডন করেছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন । তিনি টুইটে দাবি করেন, রাজ্যের মাথাপিছু আয় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। 2010 সালে যেটা ছিল 51,543 টাকা, সেটাই 2019 সালে হয়ে দাঁড়িয়েছে 1.09 টাকা । শিল্প না-থাকার কারণেই বাংলা এখানকার নাগরিকদের চাকরি দিতে পারছে না – মোদির এই অভিযোগকেও উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ বলেছেন, ”2012 সালে বাংলায় 34.6 লাখ ছোট ব্যবসা চলত, এখন সেটা হয়েছে প্রায় 89 লাখের ।” কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী-কিষান প্রকল্প বাংলার কৃষকদের পেতে দিচ্ছে না মমতার সরকার। সোমবার ফের এই তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রী । পুরনো অস্ত্রে শান দিয়ে তিনি তুলে এনেছেন আয়ুষ্মান প্রকল্পের কথাও । তবে সেই অভিযোগও খণ্ডন করে ডেরেকের টুইট, ”একরপ্রতি কৃষকদের বার্ষিক 6,000 টাকা আর্থিক সাহায্য দেয় বাংলা । যেখানে প্রধানমন্ত্রী-কিষান প্রকল্প একরপ্রতি 1,214 টাকা আর্থিক সাহায্য দেয় ।” পাশাপাশি মমতার দাবি ফের তুলে ধরে ডেরেক জানিয়েছেন, কেন্দ্রের কৃষক প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য 2.5 লাখ কৃষকের নাম কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁদের অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা পড়েনি । এ ছাড়াও স্বাস্থ্যবিমা প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের 2 বছর আগে থেকেই শুরু হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী । এই প্রকল্পে 100 শতাংশ বাংলার নাগরিকদের পরিষেবা দিচ্ছে সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারি খরচে ।মোদির আরও অভিযোগ ছিল যে, বাংলার মানুষকে বিশুদ্ধ পানীয় জল দিতে পারেনি রাজ্য সরকার । তাঁর কথায়, কেন্দ্র এ ক্ষেত্রে 1,700 কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও তার থেকে খরচ হয়েছে মাত্র 609 কোটি টাকা । এ কথার জবাব দিয়ে ডেরেক লিখেছেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার একটি প্রকল্প এনেছে, যার মাধ্যমে 2 কোটি মানুষের ঘরে পাইপের জল পৌঁছে দেওয়া হবে । এ জন্য খরচ হওয়া 58,000 টাকার সম্পূর্ণ ব্যয়বহন করবে রাজ্য সরকার ।” রাজ্যের পাট ও আলু শিল্পে আঘাতের অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ । ফ্যাক্ট চেকে উঠে এসেছে দুর্গা পুজো প্রসঙ্গও । নতুন রেল রুটের ঘোষণা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে ডেরেক লিখেছেন, ”আজ প্রধানমন্ত্রী দাবি করলেন যে বাংলায় নয়া রেল রুট তিনি শুরু করলেন । মিথ্যে ! 2011 সালের 25 ফেব্রুয়ারি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বাজেটে এই বরাদ্দ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নিজেরাই দেখে নিন…” এই টুইটের সঙ্গে 2011 সালের 25 ফেব্রুয়ারির পিআইবি-র একটি বিবৃতির স্ক্রিনশটও তুলে ধরেছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন ।