দেশ

মিলছে না হিসেব! ভারতীয় ডাক বিভাগ থেকে বেপাত্তা প্রায় ১ লক্ষ ৯৫ হাজার কোটি টাকা

এবার মোদি সরকারের জমানায় আরও এক বড়সড় কেলেঙ্কারি কী এবার সামনে আসতে চলেছে! ডাক বিভাগ বা India Post থেকে বেপাত্তা প্রায় ১ লক্ষ ৯৫ হাজার কোটি টাকা। কেননা সেখানে হিসেব মেলাতে পারছেন না ডাক বিভাগের কর্মীরা। প্রায় ১ লক্ষ ৯৫ হাজার কোটি টাকার হদিশই পাচ্ছেন না তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে বিভাগের পদস্থ অফিসাররা মুখে কুলুপ দিলেও নানারকম জল্পনা শুরু হয়েছে। বড়সড় আর্থিক দুর্নীতি বা প্রতারণার আশঙ্কা করছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে বিভাগে শোরগোল চলছে মাসখানেক ধরে। এই টাকার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ভাগ কতটুকু, তাও স্পষ্ট নয়। তগবে গোটা দেশের মধ্যে ডাকঘরে টাকা রাখার ক্ষেত্রে বাংলাই(Bengal) শীর্ষে। তা সে India Post Savings Accout-এর মাধ্যমেই হোক কী Monthly Income Scheme বা MIS-এর মাধ্যমেই হোক। এখন সেই টাকা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চিঠিপত্র বিলি, পার্সেল বুকিং ও ডেলিভারির মতো নির্দিষ্ট কয়েকটি পরিষেবা দেওয়াই হল ডাক বিভাগের নিজস্ব কাজ। এর পাশাপাশি দেশের প্রায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজার পোস্ট অফিস থেকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষ ডাকঘরে এসে অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং লেনদেন করেন। PPF, MIS, Recurring Deposit বা RD’র মতো স্বল্পসঞ্চয় প্রকল্পও পাওয়া যায় ডাকঘরে। বাংলার হাজার হাজার পরিবারের সঞ্চয় রয়েছে এই সব পোস্টঅফিসের মাধ্যমে ডাক বিভাগ বা India Post-এর কাছে। সেভিংস অ্যাকাউন্ট বা স্বল্প সঞ্চয়ের স্কিমগুলি চলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে। তাই এক্ষেত্রে সুদের হার সহ নীতিগত সিদ্ধান্তগুলি নেয় অর্থমন্ত্রক। কিন্তু প্রকল্পগুলি চালিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার আছে ডাক বিভাগের। প্রতিটি অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ডাক বিভাগ অর্থমন্ত্রক থেকে কমিশন বাবদ ৩১২ টাকা ৫০ পয়সা করে পায়। এই টাকাই ডাক বিভাগের মূল আয়। সূত্রের খবর, এই অ্যাকাউন্টগুলিতে থাকা সাধারণ মানুষের টাকার হিসেব অর্থমন্ত্রককে দিতে পারছে না ডাক বিভাগ। কার্যত হিসাব দিতে গিয়েই সামনে আসে বিপুল অঙ্কের টাকার গরমিল। সাম্প্রতিক অতীতে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট চালু রাখা থেকে শুরু করে স্বল্প সঞ্চয়ের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে ডাকঘরে। এসব ঘটনা আটকাতে এক গুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে ডাক বিভাগ। প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার সংযোগ, মোবাইল নম্বর যুক্ত করা বাধ্যতামূলক হয়েছে। কোনও গ্রাহকের একাধিক Customer Information File বা CIF থাকলে তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। একটি মাত্র CIF’র মাধ্যমেই লেনদেন নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে নিয়মগুলি চালুর আগেই বিপুল টাকার প্রতারণা হয়ে গিয়েছে বলে আশঙ্কা অনেকের। তবে ১ লক্ষ ৯৫ হাজার কোটি টাকার হদিশ না মেলার বিষয়ে ডাক বিভাগের কর্তারা কোনও দুর্নীতি হয়েছে এটা মানতে চাইছেন না। তাঁদের দাবি, গোটা বিষয়টি কাগুজে হিসেবে রয়েছে। কোনও গরমিল হয়তো থাকতে পারে। কিন্তু এই অঙ্কের টাকার দুর্নীতি হয়েছে, তা বলা যায় না। চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে হিসেব মিলিয়ে দিলেই হবে। সেই কাজ চলছে দ্রুত গতিতে।