নবান্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কোরনা উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে। সেজন্যই জুলাই মাসেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে। তবে নির্ধারিত সূচি মেনে পরীক্ষা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের নিরিখে রাজ্য সরকার এর আগে ৩০ জুন পর্যন্ত স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অন্যদিকে, বেসরকারি স্কুল গুলিকে চলতি বছর তাদের ফিজ না বাড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন। রাজ্য সরকারি দফতরে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমাতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এখন থেকে দুটো শিফটে কাজ হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। বর্তমানে রাজ্য সরকারি দফতরে ৭০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ চলছে। এখন থেকে একটি শিফটের বদলে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ২টো ৩০ মিনিট এবং দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুটি আলাদা শিফটে সেখানে কাজ হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। নবান্নে বুধবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির স্বার্থে সরকারি-বেসরকারি অফিস শিল্প সংস্থায় কাজ শুরু হলেও ট্রেন মেট্রোর মত গণপরিবহন না চলায় কর্মীরা কর্মস্থলে পৌঁছতে অসুবিধায় পড়েছেন। শহরে প্রতিদিন ৫ হাজার বাস চালানো হলেও মানুষের সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত।’ পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি দফতরের কর্মীদের অফিসে পৌছনোর সময়ের ক্ষেত্রেও কিছুটা ছাড় দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। নির্ধারিত সময়ের ১ ঘন্টা দেরিতে এলেও সংশ্লিষ্ট কর্মীকে দেরিতে আসার জন্য লাল কালির মার্ক দিয়ে চিহ্নিত করা হবে না বলে তিনি জানান। অন্যদিকে বেসরকারি দফতরের কর্মীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে যথাসম্ভব বাড়িতে থেকে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে অনুরোধ করেছেন। যেখানে তা সম্ভব নয় সেখানে কাজের সময় ভাগ করে দেওয়ারও তিনি আবেদন জানান। কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা না করার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন। লকডাউন শুরুর সময় কাজ না করলেও কর্মীদের পুরো বেতন দেওয়ার কথা বলেও পরে কেন্দ্রীয় সরকার অবস্থান বদল করে কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা এবং ঘূর্ণিঝড় আমফানের ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও একমাত্র এরাজ্যই কর্মচারীদের পুরো বেতন দিচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন। লক ডাউনের জেরে রাজ্যে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে রাজ্য সরকার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে এখনো পর্যন্ত ৭ কোটি কর্ম দিবস তৈরি করতে পেরেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে আরও বেশি করে কর্ম দিবস সৃষ্টি করার জন্য সব জেলার জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৩৩টি ট্রেনে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১১ লাখ পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্য থেকে ফিরে এসেছেন বলে তিনি জানান। আগামী চার দিনে আরও ২২ টি ট্রেনে ৩০ হাজার শ্রমিক রাজ্যে আসবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। যেসব পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফিরে আসছেন স্টেশনে তাদের স্ক্রিনিং করে ১৪ দিনের পরিবর্তে সাত দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। পরিকল্পনাহীন ভাবে গাদাগাদি করে অধিক সংখ্যায় শ্রমিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন। এদিন তিনি আরও বলেন, আগামী জুলাই মাসে রাজ্যে স্কুল-কলেজ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।