কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে কড়া চিঠি দিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চিঠিতে লেখেন, ‘সংবিধান অনুসারে আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনার জন্য কী ভাবে রাজ্যের দুই অফিসারকে তলব করা হল?’এর পর কল্যাণের প্রশ্ন, ‘রাজ্য তালিকাভুক্ত কোনও বিষয়ে ভারতীয় সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী কি হস্তক্ষেপ করা যায়?’ তাঁর কটাক্ষ, ‘মনে হচ্ছে এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে।’ নড্ডার কনভয়ে হামলার পর যতই রাজ্যকে দুষেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, ততই তৃণমূল নেতারা তার পাল্টা জবাবে সুর চড়িয়েছেন। শুক্রবার কল্যাণ বলেছিলেন, নড্ডার কনভয়ের ‘দুষ্কৃতী’ রাকেশ সিংহের থাকাটাই ইন্ধন জুগিয়েছে। তাঁর দাবি ছিল, ”রাকেশ খিদিরপুরের বাসিন্দা। ওর বিরুদ্ধে ৫৯টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। নড্ডার কনভয়ের সামনের একটি গাড়িতে ও যাচ্ছিল বলে খবর পেয়েছি। রাস্তার ধারে যে সব মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের প্রতি রাকেশ কুরুচিকর মন্তব্য করে বলেও শুনেছি। এ-ও জেনেছি, রাকেশ কুত্সিত ইঙ্গিত করে জনতাকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। এর আগে বিদ্যাসাগরের যে মূর্তি ভাঙা হয়েছিল, তার নেতৃত্বে রাকেশ এবং ওর দলবল ছিল।” শুক্রবার সন্ধ্যাতেই তিনি ইঙ্গিত দেন, শনিবার একটি ‘বোমা’ ফাটাতে চলেছেন তিনি। এর পরই প্রকাশ্যে এল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে লেখা তাঁর ওই চিঠি। অজয় ভাল্লাকে লেখা চিঠিতেও উল্লেখ রয়েছে রাকেশ সিংহের প্রসঙ্গ। কল্যাণ প্রশ্ন করেছেন, ‘প্রশাসনকে না জানিয়ে কী ভাবে ৫০টি মোটরসাইকেল এবং ৩০টি গাড়ি নড্ডার কনভয়ে জুড়ে দেওয়া হল? সেখানে রাকেশ সিংহের মতো দুষ্কৃতীকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরেছেন নড্ডা। যে রাকেশের নামে ৫৯টি মামলা রয়েছে’। চিঠিতে কল্যাণ লেখেন, ‘মনে হচ্ছে, এই চিঠি (মুখ্যসচিব এবং ডিজি-কে) লেখা হয়েছে মন্ত্রীর নির্দেশে, যে মন্ত্রী ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশাসনে কর্মরত দুই অফিসারকে জোর করে আলোচনায় বসার জন্য তলব করা হয়েছে’। তাঁর আরও প্রশ্ন, কেন রাজ্য থেকে তিন আইপিএস অফিসারকে সরানো হচ্ছে? কল্যাণ লিখছেন, ‘ওই তিন আইপিএস অফিসারকে সরিয়ে তাঁদের উপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে’। চিঠির ছত্রেছত্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করেছেন কল্যাণ। শেষ দিকে লিখছেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহের কথা মতো আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন। এটা খুবই লজ্জাজনক’।