নিবেদিতা শেঠ
গোটা দেশে বইছে করোনা প্লাবন।মারণ ভাইরাসের গ্রাস থেকে রেহাই নেই। চারিদিকে আর্তনাদ মানুষের। নিদারুণ করুণ পরিস্থিতির সম্মুখীন দেশবাসী। একে তো করোনায় রক্ষে নেই, এবার দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অক্সিজেনের ঘাটতি যেন দোসর হয়েছে। ভারতের মতো দেশে আজ অক্সিজেনের ঘাটতি? দিল্লি, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যে অক্সিজেনের অভাবে কাতারে কাতারে মৃত্যু ঘটছে করোনা রোগীর। প্রিয়জনেদের হারানোর শোকে আর্তনাদ ঘরে ঘরে। আতঙ্কিত করোনা রোগীর পরিজনেরা। হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু। অপ্রতুল অক্সিজেন। এহেন অভিশপ্ত পরিস্থিতিতে কী করে মিলবে সমাধান? আজ এই চিন্তাতেই ঘুম উড়েছে। কিন্তু এর জন্য সত্যিই কারা পরোক্ষভাবে দায়ী? আজ একটু অতীতের ইতিহাস ঘাটতে বড় ইচ্ছে হল। লক্ষ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীর ষাট শতাংশ বনাঞ্চল ছিল। বহু প্রাণীর খাদ্যের জোগান এই বনাঞ্চল থেকেই হত। অনেক প্রাণীর লালনক্ষেত্র হিসেবেও কাজ করে বণাঞ্চল। আবার মাটি সংরক্ষণেরও কাজ করে। পৃথিবীর জীবমণ্ডলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ অরণ্য অক্সিজেনের এক বিপুল সরবরাহকারী। আর এই কথাগুলো ক্রমে সভ্য হয়ে ওঠা দেশগুলি ক্রমোন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ভুলে গিয়েছে। তার মধ্যে আমাদের দেশও পরে বৈকি। দিল্লি-মুম্বই তে গগনচুম্বী বিল্ডিং হাঁকিয়ে কর্পোরেট দুনিয়াকে মুঠোয় এনে মেট্রোপলিটন সিটি তো বানানো হয়েছে। কিন্তু তারজন্য কত উদ্ভিদের অকালে প্রাণ গেছে কেউ খবর রেখেছে। দিল্লিতে নিষ্ঠুরভাবে বিনাশ করা হয়েছে না জানি কত বণাঞ্চলঝাঁ চকচকে শহর গড়ে বানাতে গিয়ে। মহারাষ্ট্রে বুলেট ট্রেন ছুটবে বলে নির্বিচারে ধ্বংস হতে হয়েছে ম্যানগ্রোভ অরণ্যকে। কোথায় যাবে এত অপরাধ! এখন অক্সিজেনের জোগান দিতে বিশাখাপত্তনম থেকে অক্সিজেনের ট্রেন যাচ্ছে মহারাষ্ট্রে। এমনই হাল হল। আর বাংলাও রেয়াত পাবে না, এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, অক্সিজেনের ঘাটতি এখানেও হতে চলেছে। অক্সিজেনের ঘাটতি পড়ছে দিকে দিকে। করোনা আবহে অমূল্য সম্পদ অক্সিজেন! আমাদেরও একটু বোঝা দরকার, উদ্ভিদ প্রাণ এতটাও সস্তা নয়? পরোক্ষভাবে দাম তো দিতেই হবে।