গুজরাতের মোরবিতে ভয়াবহ সেতু দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। ঘটনার দু’দিন পরে মঙ্গলবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাবেন তিনি। পাশাপাশি ব্রিজ ভেঙে পড়ে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের দেখতে সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন মোদি। আর তাই আহতদের চিকিৎসা পরিষেবা শিকেয় তুলে রাত জেগে হাসপাতাল সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত রইলেন কর্মচারীরা। নিখোঁজ আত্মীয়কে খুঁজতে আসা ব্যক্তিদেরও ঠায় অপেক্ষা করতে হল।এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় তুলেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস ও আপের তরফে হাসপাতাল মেরামত করার বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। কংগ্রেসের তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, “মঙ্গলবার মোরবির সরকারি হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগেই হাসপাতালের মেরামতির কাজ চলছে। নতুন করে রঙ করা হচ্ছে, টাইলস বসানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এসে ছবি তুলবেন, সেই জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টার কোনও কমতি রাখছে না। তাদের একটুও লজ্জা হচ্ছে না। এত মানুষ মারা গিয়েছেন, তার মধ্যেও উৎসবের তোড়জোড় করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।” একই ধরনের কথা বলা হয়েছে আপের তরফেও। “প্রধানমন্ত্রীর ফোটোশুটে যেন কোনওরকম সমস্যা না হয়, সেই জন্য হাসপাতাল মেরামতির কাজ চলছে। গত ২৭ বছর ধরে বিজেপি সরকার যদি কাজ করত, তাহলে এরকম সময়ে মাঝরাতে হাসপাতাল সাজিয়ে তোলার দরকার হত না।” জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আসার খবর পেয়েই হাসপাতালের দেওয়াল আর ছাদ চুনকাম করা হয়। নতুন ওয়াটার কুলার কিনে আনা হয়। আহতদের বিছানার চাদর পালটে দেওয়া হয়। ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করা গোটা হাসপাতাল। প্রধানমন্ত্রীর চোখে যাতে হাসপাতালের কোনও খামতি চোখে না পড়ে তার জন্য চেষ্টার কোনও কসুর করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে জোর কদমে কাজ করলেও এখনও হাসপাতালের বেশ কিছু অংশে মেরামতি করা সম্ভব হয়নি। বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, হাসাপাতালের কর্মচারীরা সাফাই অভিযানে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন, বিপদে পড়া সাধারণ মানুষের কথা তাঁদের মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। বিনোদ দাপাট নামে এক ব্যক্তি বলেন, “আমার দুই আত্মীয় ওই সেতু দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও তাঁদের কোনও খোঁজ নেই। হাসপাতালে এসে তাদের কথা জিজ্ঞাসা করলেও কোনও উত্তর পাইনি। কারণ সকলে এখন দেওয়াল রঙ করতে ব্যস্ত। প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে আসবেন বলে আমাদের কথার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই তাঁদের।”