আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গত ১৪ অগস্ট মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচীর রাতেই পূর্ব বর্ধমানের এক আদিবাসী ছাত্রীকে গলা কোটে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল। প্রথম থেকেই এই ঘটনায় ভিন রাজ্যের এক যুবকের ওপর সন্দেহ ছিল পুলিশের। অবশেষে সেই ঘটনায় ৯ দিন পর খুনের কিনারা করল পুলিশ। এই অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত যুবকের নাম অজয় টুডু। সে ভিন জেলার বাসিন্দা। আজ শনিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তোলা হবে। জানা গিয়েছে, ১৪ অগস্ট রাতে ঘটনাটি ঘটেছিল পূর্ব বর্ধমানের নান্দুর গ্রামের ঝাপানতলায়। শৌচকর্মের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ছাত্রী। দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফেরায় তাঁর মা বাড়ির বাইরে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে বাড়ির নিকটেই তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের অনুমান ছিল, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই যুবতীর পূর্বপরিচিত ছিল। তার ডাকে সাড়া দিয়ে যুবতী ওই রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন।তার পরেই তাঁকে খুন করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানান, অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরে। তবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। আজ শনিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হবে। নিহত যুবতীর নাম প্রিয়াঙ্কা হাঁসদা (২২)। জানা গিয়েছে, তিনি বেঙ্গালুরুর এক শপিংমলে কাজ করতেন। এর পাশাপাশি পড়াশোনাও করছিলেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরও পড়ছিলেন তিনি। ঘটনার কয়েকদিন আগেই তিনি বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফেরেন। এর দুদিন পরেই রাতে বাড়ির অদূরে তাঁর নলি কাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বর্ধমান থানা এবং শক্তিগড় থানার পুলিশ।ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ওই যুবকের নাম জানতে পারে। এদিকে, ভিন রাজ্যের যুবকের এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন যুবতীর বাবা। ঘটনায় অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবিতে গত রবিবার সকালে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের গাংপুর সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করেন আদিবাসীরা। সেই অবরোধে পৌঁছন মালদার হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জুয়েল মুর্মু। সেই ঘটনায় তিনি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন এবং সিবিআই তদন্তের দাবি জানান। অবশেষে সেই ঘটনায় গ্রেফতার হল অভিযুক্ত। কী কারণে যুবতীকে খুন করা হয়েছিল? ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।