জেলা

ভাঙড়ে শান্তি ফেরাতে পুলিশের রুটমার্চ

ভাঙড়ে সংঘর্ষের পর কেটে গিয়েছে দু’দিন। এখনও থমথমে বিভিন্ন এলাকা। শনিবার মনোনয়নপত্র স্ক্রুটিনির প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নেই মিটেছে। তবে এলাকাবাসীদের আতঙ্ক কাটাতে ভাঙড়ে পুলিসের রুট মার্চ চলে। বিভিন্ন স্পর্শকাতর অঞ্চলে বসেছে পুলিস পিকেটিং। পাশাপাশি, ড্রোন উড়িয়ে চলেছে নজরদারি। এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচটি এফআইআর দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় বারুইপুর পুলিস জেলার সুপার মিস পুষ্পার নেতৃত্বে রুট মার্চ শুরু হয়।  উপস্থিত ছিলেন এডিজি (সাউথ বেঙ্গল) সিদ্ধিনাথ গুপ্তা সহ জেলার পদস্থ পুলিস আধিকারিকরা। দোকানদার সহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন কর্তারা। এখনও সংঘর্ষের চিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। সেইসঙ্গে থমথমে ভাব, আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি। নতুন করে যাতে অশান্তি না হয়, সেজন্য কেবল কাশীপুর থানা এলাকায় দিনভর ঘুরলেন প্রায় ৪০০ পুলিস কর্মী। ইনসপেক্টর, ডেপুটি সুপার, অতিরিক্ত পুলিস সুপার, পুলিস সুপার—কে ছিলেন না সেই দলে। তবে ভাঙড়বাসীর এখন একটাই প্রশ্ন, কবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে গ্রাম? এদিন স্ক্রুটিনি প্রক্রিয়ায় তৃণমূল ও আইএসএফ—দুই পক্ষই হাজির ছিল বিডিও অফিসে। জানা গিয়েছে, জাতিগত শংসাপত্রে ভুল থাকায় প্রায় ৫০ জন আইএসএফ কর্মীর মনোনয়ন আটকে গিয়েছে। সূত্রের খবর, ভাঙড় ২ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১৮টি গ্রাম সংসদ ও পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের সবক’টিতে মনোনয়ন দিয়েছে তৃণমূল। আইএসএফ ও সিপিএম সমঝোতা করে মনোনয়ন দিয়েছে। এদিন মৃত আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিনের শেষকৃত্যে হাজির হয়েছিলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। তবে তিনি রাজনৈতিক সংঘর্ষ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। এদিকে ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ এবং টাকা নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা অস্বীকার করেছেন তিনি। বিধায়কের কথায়, এটা মিথ্যে অভিযোগ। নির্বাচন থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য এটা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিজেপি নেতার সঙ্গে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির কথোপকথনের একটি হোয়াটসঅ্যাপ সামনে এনেছিল তৃণমূল। বিধায়কের সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেছে শাসক দল। তৃণমূলের তরফে সামনে আনা একটি ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, নৌশাদ বলছেন, ‘আমরা যাঁরা বিজেপিকে পছন্দ করি, তাঁরা টিএমসিকে ভোট দিয়ে কী লাভ হবে, কী করব।’ এই প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, আইএসএফের সঙ্গে বিজেপির যোগসূত্র আরও প্রত্যক্ষ হচ্ছে। অপরদিকে ভাঙড়ে লাগাতার সন্ত্রাস নিয়ে পাঁচটি এফআইআর হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। বিজয়গঞ্জ বাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির ঘটনায় ৩টি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিস। কর্তব্যরত পুলিস কর্মীদের মারধর-সহ ভাঙচুরের ঘটনায় জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভাঙড় ২ নম্বর ব্লক অফিসে অনুপ্রবেশের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছেন ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও। পঞ্চম এফআইআর দায়ের করেছেন নিহত তৃণমূল কর্মী রশিদ মোল্লার ভাই।