কলকাতা

রাজ্য সরকার জনগণের উপর বাড়তি করের বোঝা চাপাবে না, সামাজিক প্রকল্পে মিলবে পর্যাপ্ত বরাদ্দ: অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য

রাজ্য সরকার জনগণের উপর বাড়তি করের বোঝা চাপাবে না। পাশাপাশি লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, বাংলার বাড়ি, জয় বাংলা ও কৃষক বন্ধু-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ারও আশ্বাস দিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।বুধবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে তিনি স্পষ্ট করে জানান, আগামী আর্থিক বছরে 2 লক্ষ 66 হাজার কোটি টাকা কর ও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ৷ যা চলতি বছরের তুলনায় 29 হাজার 809 কোটি টাকা বেশি ৷ তবে করের বোঝা না-বাড়িয়ে সরকারের আয় বৃদ্ধির পথ খোঁজা হবে বলে আশ্বস্ত করেন অর্থমন্ত্রী।এদিন বিধানসভায় ফিসকাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট সংশোধনী বিল এবং দু’টি অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল পেশ করা হয় ৷ আলোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, আগামী অর্থবর্ষে লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য 26,700 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ৷ তিনি বলেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার শুধুমাত্র একটি প্রকল্প নয়, এটি বাংলার নারীদের সম্মান।” এছাড়া, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের জন্য 15,456 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ৷ যার মাধ্যমে আরও 16 লক্ষ নতুন বাড়ি নির্মাণ হবে। পাশাপাশি, জয় বাংলা প্রকল্পে 10,603 কোটি টাকা এবং কৃষক বন্ধু প্রকল্পে 5,782 কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়েছে ৷ অর্থমন্ত্রী আরও জানান, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য 5,000 কোটি টাকা অতিরিক্ত মূলধনী ব্যয় করা হবে। পাশাপাশি, আগামী অর্থবর্ষে বাজার থেকে 81,972 কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৷ তবে এফআরবিএম (FRBM) আইন মেনে তা রাজ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের তিন শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে ৷ তিনি উল্লেখ করেন, রাজ্য সরকার চলতি অর্থবর্ষে ঋণ ও সুদ বাবদ 80 হাজার কোটি টাকার বেশি পরিশোধ করবে।রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির দিকটি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বাংলার গড় মাথাপিছু উৎপাদন (জিএসডিপি) 9.91 শতাংশ, যা কেন্দ্রীয় গড়ের তুলনায় অনেক বেশি।” তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার আলোচনায় জানান, আর্থিক শৃঙ্খলা মেনে চলার ক্ষেত্রে বাংলা বর্তমানে দেশে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। অর্থমন্ত্রী আরও জানান, 2029-30 আর্থিক বছর পর্যন্ত রাজ্যের ঋণের পরিমাণ তিন শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে ৷ পাশাপাশি, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের জন্য অতিরিক্ত 0.5% ঋণ নেওয়ার অনুমতি পাবে রাজ্য ৷ বাজেটে ঘোষিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনেও বিরোধী বিজেপি বিধায়করা আলোচনায় অংশ নেননি। বিরোধী শূন্য বিধানসভায় ধ্বনি ভোটে তিনটি বিল পাস হয়।