কলকাতা

হল না শপথ, বিধানসভাতেই ধরনায় দুই তৃণমূল বিধায়ক

রাজ্যপাল বিধানসভায় এসে শপথবাক্য পাঠ করান । এই দাবিতে বিধানসভা ভবনের সিঁড়িতে ধরনায় বসলেন দুই বিজয়ী বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার ৷ রাজ্যপালের নির্দেশমতো এদিন তাঁরা শপথ নিতে রাজভবনে যাননি ৷ বুধবার বেলা ১১টায় বিধানসভায় পৌঁছে যান এই দুই বিধায়ক ৷ তাঁরা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, রাজ্যপাল রাজভবনে শপথের কথা বললেও যেহেতু তাঁদের কর্মক্ষেত্র বিধানসভা, তাই তাঁরা বিধানসভাতেই শপথের জন্য অপেক্ষা করবেন । সেইমতো বিধানসভায় গিয়ে তাঁরা বিধানসভার সিঁড়িতে বসেই রাজ্যপালের জন্য অপেক্ষা করছেন । রাজ্যপাল শপথের জন্য সময় দিয়েছিলেন দুপুর ১২টা ৷ কিন্তু সেখানে যাননি দুই বিজয়ী বিধায়ক ৷ তাঁরা বিধানসভাতেই অপেক্ষা করছেন রাজ্যপালের জন্য ৷ একইসঙ্গে ধরনাতেও বসেছেন তাঁরা । দু’জন বিধায়ক শপথ নেওয়ার আগেই বিধানসভার সিঁড়িতে ধরনায় বসেছেন, এই দৃশ্য আক্ষরিক অর্থই নজিরবিহীন । এমন দৃশ্য শুধু বাংলা কেন, গোটা দেশে অতীতে দেখা গিয়েছে কি না সন্দেহ। গত কয়েকদিন ধরেই এই দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে টানাপোড়ন চলছিল । দুই বিধায়ক চাইছিলেন রাজ্যপাল স্পষ্ট করুন, তাঁদের শপথবাক্য পাঠ কে করাবেন, তা কোথায় হবে, তা জানুক বিধানসভাও । গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় চিঠি চালাচালি হয়েছে ৷ হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও‌ । কিন্তু পরিস্থিতি যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে । রাজনৈতিক মহল বলছে, এর ফল হয়তো এমনটাই হওয়ার ছিল । একদিকে রাজভবনে রাজ্যপাল অপেক্ষা করছেন নবনির্বাচিত বিধায়করা কখন আসবেন সেজন্য । অন্যদিকে বিধানসভায় অপেক্ষারত বিধায়কেরা । আর তাকে ঘিরে চলছে রাজনৈতিক আকচাআকচি । এদিন এই পরিস্থিতি নিয়ে বরানগরের নির্বাচিত তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখনও বুঝতে পারছি না মানুষের ভোটে জেতার পরেও নিজেদের বিধায়ক বলতে পারব কি না । যে মানুষগুলো আমাদের ভোট দিলেন তাঁদের পরিষেবা দিতে পারব কি না । কারণ এখনও আমরা জানি না আমরা শেষ পর্যন্ত শপথ নিতে পারব কি না । আমাদের দাবি খুব স্পষ্ট । আমাদের রাজভবনে যেতেও আপত্তি নেই । কিন্তু রাজ্যপালকে স্পষ্ট করতে হবে, আমাদের শপথবাক্য পাঠ কে করাবেন ! সেটা তো বিধানসভার কারওকে জানাতে হবে । কারণ বিধানসভা আমাদের কর্মক্ষেত্র ৷ সেখানেও কিছু অফিসিয়াল কাজ রয়েছে । অতএব উনি যাতে আমরা শপথ নিতে পারি সেটা নিশ্চিত করুন ৷” এদিন এই নিয়ে মুখ খুলেছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও । তিনি বলছেন, “গোটা বিষয়টি নিয়ে অহেতুক জলঘোলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে । দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি কেবলমাত্র প্রোটেম স্পিকারদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন । প্রধানমন্ত্রীও লোকসভায় এসে শপথ নিয়েছেন । এরা তো বিধানসভার সদস্য । তাহলে রাজ্যপালের কি প্রয়োজন তাঁদের রাজভবনে ডেকে শপথবাক্য পাঠ করানোর । রাজ্যপাল শুধু এই সমস্ত ঘটনার মাধ্যমে বিধানসভাকে অবমাননা করছেন না, অবমাননা করছেন পরিষদীয় গণতন্ত্রকেও ।”