সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই ‘সিঙ্গুর আন্দোলন লোকাল’ নামে লোকাল চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে সেই ‘সিঙ্গুর লোকাল’কে তুলে নিচ্ছে রেল। এর প্রতিবাদে রেলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামছেন শাসকদলের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। উল্লেখ্য, সিঙ্গুর আন্দোলনের স্মৃতিকে সামনে রেখে 2009 সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 2টি হাওড়া-সিঙ্গুর লোকাল ট্রেন চালু করেছিলেন। যা সিঙ্গুর আন্দোলন লোকাল নামে সেইসময় ঘোষণা করা হয় ৷ কৃষক আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই লোকাল চালুর উদ্দেশ্য। পরবর্তীতে সিঙ্গুর লোকাল নামেই পরিচিত হয়। এই ট্রেনের একটি সকাল 06.30টায় সিঙ্গুর স্টেশনে পৌঁছয় এবং 08.12 মিনিটে সিঙ্গুর থেকে ছেড়ে যায়। অপর ট্রেনটি রাত 8.15 মিনিটে সিঙ্গুরে ঢোকে এবং 9টায় সিঙ্গুর থেকে ছেড়ে যায় ৷ নতুন বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ বুধবার সিঙ্গুর লোকাল আটকে বিক্ষোভ দেখাবে তৃণমূলও। রেল সূত্রে খবর, সিঙ্গুর লোকাল তুলে নেওয়া হচ্ছে না। তারকেশ্বর ও হরিপাল পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হচ্ছে মাত্র। এতেই আন্দোলনে নেমেছে তৃণমূল ৷ মঙ্গলবার সিঙ্গুর 1 নম্বর স্টেশনে তৃণমূলের তরফে মন্ত্রী বেচারাম মান্না, হরিপালের বিধায়ক করবী মান্না ও তৃণমূল নেতৃত্ব আন্দোলনে সামিল হয়। সিঙ্গুর লোকালের যাত্রাপথ দীর্ঘ করে তারকেশ্বর ও হরিপাল পর্যন্ত করে দেওয়ার প্রতিবাদ জানানো হয়। রেলের বিরুদ্ধে বুধবার ফের আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছেন বেচারাম মান্নার। মন্ত্রী এদিন বলেন, “পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই নোটিশ দেওয়া হয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলন লোকাল চলবে তারকেশ্বর পর্যন্ত। তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরবাসীর জন্য সিঙ্গুর আন্দোলন লোকাল চালু করেছিলেন ৷ সিঙ্গুর একটি জনবহুল এলাকা। এই স্টেশন দিয়ে 52টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। সিঙ্গুর লোকাল থাকায় স্বাচ্ছন্দের সঙ্গে রেলে যাতায়াত করতে পারতেন। তাই সিঙ্গুর লোকাল তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত যতক্ষণ না-বাতিল করা হচ্ছে আমরা আন্দোলন করব।” তিনি আরও বলেন, “কোনও রেল অবরোধ হবে না। আগামিকাল সিঙ্গুর লোকাল আটকে রাখা হবে। কারণ সিঙ্গুরের আন্দোলনের ইতিহাসকে আমরা মুছে যেতে দেব না। সিঙ্গুরবাসী ও যাত্রী হিসাবে দলমত নির্বিশেষে আমরা প্রতিবাদ করছি।” মন্ত্রীর দাবিকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা মধুসূদন দাস বলেন, “সিঙ্গুর লোকাল ট্রেন যদি সম্প্রসারণ করা হয় তাহলে সিঙ্গুরবাসীর কোনও অসুবিধা হবে না। সিঙ্গুর আন্দোলনে স্মৃতি ভাঙিয়ে ক্ষমতায় থাকছে চাইছে তৃণমূল। সেটা হবে না।” পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “যাত্রীদের চাহিদা রয়েছে ৷ তাই দু’টি সিঙ্গুর লোকালের একটি তারকেশ্বর থেকে ও একটি হরিপাল থেকে চলবে। তাতে সিঙ্গুরের যাত্রীদেরও সুবিধা হবে। ট্রেন তুলে নেওয়া হয়নি।”