কলকাতা পুজো

‘দুর্গাপুজো নিয়ে যারা ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে তাদের কান ধরে ওঠবোস করান’, কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

জ্যোতির্ময় দত্ত , কলকাতাঃ আজ রাজ্য পুলিশের অনুষ্ঠানের নাম না করেই বিজেপি কে তীব্র সমালোচনা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।তিনি বলেন করোনা আবহাওয়া তে কি ভাবে দুর্গাপুজো হবে তাই নিয়ে আম বাঙালির চিন্তার শেষ নেই এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে চলছে ভুয়ো পোস্টের ছড়াছড়ি। দুর্গাপুজো নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপে। এই ভুঁয়ো খবর গুলি করোনা আবহাওয়া তে পুজো কে আরো জঠিল করে তুলছে । তিনি বলেন বাঙালির সেরা উত্‍সব কে নিয়ে এমন প্রচেষ্টা বরদাস্ত করা হবেনা । এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার পুলিশকে নির্দেশ দেন, “যে বা যারা এই ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে তাদের চিহ্নিত করুন এবং প্রকাশ্যে ১০০ বার ওঠবোস করান৷” এখনও পুজো নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে পুলিশ বা পুজো উদ্যোক্তাদের কোনও বৈঠক বা আলোচনাই হয়নি বলে জানিয়ে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে মমতার কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‌প্রমাণ করুন যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বলে দিয়েছে এবার কোনও দুর্গা পুজো হবে না, আমি জনসমক্ষে ১০১ বার উঠবোস করব।’‌ ভুয়ো ওই হোয়াটসঅ্যাপে লেখা ছিল এবছর পুজোয় সারারাত ঘুরে প্রতিমা দর্শন বন্ধ। পঞ্চমী থেকে একাদশী পর্যন্ত বিকেল পাঁচটার পর থেকে জারি থাকবে নাইট কারফিউ। এছাড়াও লেখা রয়েছে মণ্ডপে একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি প্রবেশ করা যাবে না এবং প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং হবে। অষ্টমীর অঞ্জলিতে ফুল দেওয়া যাবে না। প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় শোভাযাত্রা বন্ধ রাখার কথাও উল্লেখ রয়েছে ওই ভুয়ো মেসেজে।যা নজরে আসে রাজ্য পুলিশের। আজ টুইটে পুলিশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই মেসেজের কোনও সত্যতা নেই। যে বা যারা এই কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে ফেসবুক ও টুইটারে একটি ছবিও পোস্ট করা হয়। তাতে বড় অক্ষরে ‘ভুয়ো’ লেখা। ছবির সঙ্গে লেখা হয়েছে,’দুর্গাপুজো নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে এই গুজবটি ছড়াচ্ছে। এ রকম কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। দয়া করে মেসেজটি ফরোয়ার্ড করবেন না। এটি মিথ্যা।’ অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন , রাজ্য সরকার ১ সেপ্টেম্বর দিনটি পুলিশ দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছেন । কিন্তু প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক থাকায় এই পুলিশ দিবসটি পালন করা যায়নি তাই আজ এই দিবসটি পালন হচ্ছে। তিনি বলেন করোনা মোকাবিলা তে পুলিশ অসামান্য ভূমিকা নিয়েছে মানুষ জন কে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি রক্ত এবং প্লাজমা ও দান করেছে পুলিশ । অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই,সন্মান জানানো হয় করোনা যোদ্ধাদের।করোনা সংক্রমনে পুলিশ সহ যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের প্রাণ গেছে,তাদের পরিবারের একজন সদস্যের হাতে চাকরির অঙ্গীকারপত্র তুলে দেওয়া হয় আজ।কলকাতা পুলিশের ৭-জন,পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ৮-জন,স্বাস্থ্য দপ্তরের ৪-জন ও একজন ডব্লুবিসিএস অফিসারের পরিবারের সদস্যকে আজ চাকরি দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান “আমাদের রাজ্যের পুলিশ অসাধারন কাজ করছে।করোনার সময়ে জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সমস্তই পুলিশকে করতে হচ্ছে।তাই আমরা তাদের স্যালুট জানাই।পুলিশের কর্মীদের অনেকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে নিন্দা করেন।কিন্তু কি ভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজ করছে,আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করছে তা দেখতে পান না।” একই সাথে আজ একাধিক পুলিশি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।সব শেষে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে সমস্ত পুলিশ কর্মীদের সন্মান জানান মমতা বন্দ্যোপধ্যায়।