সুপ্রিম কোর্টে আরজিকর মামলার শুনানিতে কলকাতায় কর্মবিরতিতে থাকা জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে সময় বেঁধে দিলেন প্রধান বিচারপতি। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার মধ্যে মঙ্গলবার বিকাল ৫টার মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিমকোর্ট। সোমবার সুপ্রিমকোর্টে আরজিকর মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফ থেকে রিপোর্ট পেশ করা হয় ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। সেই সঙ্গে প্রভাব পড়েছে প্রায় ৬ হাজার মানুষের উপর। আগের শুনানিতে ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরে দ্রুত কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। তারপরেও কলকাতা ও শহরতলির সরকারি হাসপাতালগুলিতে জুনিয়র চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছেন বলে চিকিৎসা পরিষেবা ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছিল রাজ্যের পক্ষ থেকে। রাজ্যের দাবির উত্তরে ক্ষীণ পরিসংখ্যান পেশ করে ডাক্তারদের আইনজীবী জানান, কলকাতা ও শহরতলির ২০০ জন চিকিৎসক সরকারি হাসপাতালগুলিতে পরিষেবা দিচ্ছেন। বাকি সব জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতিতে, মেনে নেন ডাক্তারদের আইনজীবী গীতা লুথরা। রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে জানান, বিনা অনুমতিতেই বিভিন্ন আন্দোলন চলছে শহরে। রাজ্য সরকারের রিপোর্ট পেয়েই ডাক্তারদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। পর্যবেক্ষণে তিনি জানান, “আমরা জানি বাস্তবে কী হচ্ছে কিন্তু ডাক্তারদের অবশ্যই কাজে ফিরতে হবে। তাঁরা বলতে পারেন না সিনিয়র ডাক্তাররা কাজ করছেন বলে আমরা কাজ করব না। সবার জন্য এই নির্দেশ জারি হল।” সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “যদি ডাক্তাররা কাজে না ফেরেন তবে রাজ্য সরকারকে কোনও গুরুতর পদক্ষেপ নিতে আমরা আটকাতে পারব না।” প্রধান বিচারপতি ডাক্তারদের কর্তব্য সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে পর্যবেক্ষণে জানান, “কোনও প্রতিবাদ জোর করে চলতে পারে না।” সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট করে দেয়, সব সুবিধা সত্ত্বেও লাগাতার কর্মবিরতি চললে ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। সেই প্রসঙ্গে সব ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়ার হয় রাজ্যকে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, “রাজ্যকে সব রকম পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে ডাক্তারদের মনে বিশ্বাস তৈরি হয় যে তাঁরা তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেন এবং সেই পদক্ষেপ নিন। পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে যে সব ডাক্তারদের নিরাপত্তা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ রয়েছে, যার মধ্যে আলাদা ঘর, শৌচাগার ও সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকে।”