জেলা

‘একটু দয়া করবেন, সব উলটে দেব’, হলদিয়ার সভায় ‘হিন্দু ঐক্যে’র ডাক শুভেন্দুর

পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের একজোট হওয়ার বার্তা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। হিন্দুরা একজোট হলে রাজ্যে ২০২৬ সালে বদল সম্ভব। তেমনই দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আজ রবিবার দুপুরে হলদিয়ায় মিছিল ও সভা করেন তিনি। রাজ্যের সনাতনীদের উপর আক্রমণের অভিযোগে এদিন মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। শুভেন্দু অধিকারী এর আগে সংখ্যালঘুদের নিশানা করে বক্তব্য রাখছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “কোনও সনাতনী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিতে পারে না, পারে না, পারে না….সরস্বতী পুজো, মহকুম্ভকে মৃত্যু কুম্ভ বলার পর কেউ ভোট দেবে না। মানুষ প্রস্তুত এই রাজ্য মোদীজির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য।” তিনি এও বলেন, হলদিয়াকে শুকিয়ে দিয়েছে ওরা। নিয়োগ নেই হলদিয়াতে। উদ্বাস্তুদের কাছে কথা বলা হয় না। কলকাতার রাজ না জেলার রাজ? নাকি গ্রামের রাজ? রাম নবমী হবে,ভালো করে শান্তিপূর্ণ হবে। সংবিধানে ২৫-২৮ পড়ুন। সকলের ধর্ম পালনের অধিকার আছে। আমরা অন্য়দের বাধা দিই না। তিনি এও বলেন,  মায়েদের ৩০০০ টাকা দেবে। ২০০ ইউনিট বিদ্যুত ফ্রি। এক লক্ষ নয়, তিন লক্ষের বাড়ি দেবে। প্রতিবছর এসএসসি, জেলাতেই প্রাইমারি হবে। হাতে পায়ে ধরে টাটাকে ফিরিয়ে আনা। বন্ধু মুসলিমরা গায়ে মাখবেন না। আমি ভারতীয় মুসলিমদের বলছি না। রোহিঙ্গাদের বলছি। বাংলার হিন্দু জনসংখ্যা ৮৫ শতাংশ। আজ ৬৭। টিকে থাকবেন তো? বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। এখনও যদি ঐক্যবদ্ধ না হন তাহলে এই বাংলাও বাংলাদেশ হবে। ২৬-এ যদি তৃণমূল যদি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের লোভ দেখিয়ে, মুসলিমদের জুটিয়ে আমাদের কিছু হিন্দুকে এদিক-ওদিক করে জিতে যায়। তাহলে একই অবস্থা এই অবস্থা হবে। জাত-পাত-রাজনীতি দূরে সরিয়ে রাখো। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কদের চ্যাংদোলা করে বিধানসভার বাইরে ফেলা হবে। এই সরকার আমার বিরুদ্ধে কিছু নেড়িকে লেলিয়ে দিয়েছেন। আমি মেদিনীপুরের ছেলে ভয় পাই না। অযোধ্যার রাম মন্দিরের দিন কলকাতা পার্কসার্কাসে মিছিল করেন কেন? শুভেন্দু অধিকারী বলেন, অরবিন্দ কেজরিবাল যেমন দিল্লিতে একটার সঙ্গে একটা মদ ফ্রি করেন। তেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারের লাইসেন্স দিয়ে মদময় করেছেন মমতা। মদের প্রভাব যদি কারও উপর পড়ে তাহলে নারীদের উপর। রা মেয়ে ২০২১ আমি বোটে জেতার সার্টিফিকেট নিতে এসেছি। সেই সময় ওরা পাথর ছোড়ে। চোখের সামনে এদের আচরণ দেখেছি। এরা যা খুশি করবে আর আমাদের মানতে হবে? ওরা কত? ২ কোটি? শুধু ডায়মন্ড হারবারেই ১০ লক্ষ ছাপ্পা আছে। কেশপুরেও ছাপ্পা আছে। এখানেও আছে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ছাপ্পা আছে। এখানে অভিজিৎবাবুকে ঢুকতে দেয়নি। একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের লোক। কত ছাপ্পা হয়েছে। মাত্র ২১ লক্ষের খেলা। তাও যদি সনাতনিরা পাঁচ শতাংশ ভোট দেয়…সিপিএম লড়ছে পারছে না। ৮৪ হাজার ভোট সায়ন পেয়েছে। ৮৩ হাজার হিন্দু ভোট। ওরা ভোট দিতে দেয় না। ৩০ শতাংশ হিন্দু। ৬৫ শতাংশ হিন্দু ভোট দিতে যায়। একটু দয়া করবেন উল্টে দেব আমরা।

সংখ্যালঘুদের আক্রমণ করে বারবার আক্রমণাত্মক হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ‘চ্যাংদোলা’ ইস্যুতে দলের অন্দরেই তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা দেখা দেয় বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও শুভেন্দুর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেননি। দিন কয়েক আগে রাজ্য বিধানসভায় গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি ও প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষও। তিনিও সংখ্যালঘু ইস্যুতে কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, শুভেন্দুর ওই বক্তব্য যে সমর্থন করেন না, তাও হাবেভাবে দিলীপ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।