১৭ ঘণ্টা পর অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এল ট্যাংরার আগুন। ট্যাংরার অগ্নিকাণ্ডে উদ্বিগ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে ভাবে শহরের ঘিঞ্জি এলাকায় একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, তাতে নিজের উদ্বেগ চেপে রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী। কীভাবে হল এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, তা জানতে হাইপাওয়ার তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরসভা, দমকল ও পুলিশকে নিয়ে হবে এই কমিটি। রাজ্যের পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলেছেন তিনি। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী কমিটি তৈরি হচ্ছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। এই ফায়ার সেফটি কমিটি খতিয়ে দেখবে কলকাতায় এরকম ঘিঞ্জি এলাকায় কতগুলি গোডাউন বা কারখানা রয়েছে । সে গুলি চালানোর ক্ষেত্রে আদৌও অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা মেনে চলা হচ্ছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে ৷ এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠে আসছে। চামড়ার গুদামটি যে রাস্তায় ছিল, সেটি অত্যন্ত সরু। প্রশ্ন, কেন ওই রকম জায়গায় তৈরি হয়েছিল চামড়ার গুদাম। ওই গুদামটির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তদন্তের পর গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শনিবার সন্ধেবেলা ভয়াবহ আগুন লাগে কলকাতার ট্যাংরার একটি চামড়ার গুদামে। চামড়া, রেক্সিন, রাসায়নিক পদার্থ – সবই দাহ্য পদার্থ। ফলে ট্যাংরার মেহের আলি লেনের চামড়ার গুদামে লাগা আগুন যতটা ভয়ংকর মনে করা হচ্ছিল, তার চেয়ে অনেকটাই বেশি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। দমকলের ইঞ্জিনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০-তে। গোটা রাতের চেষ্টার পরেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি আগুন। রবিবার সকালেও জ্বলছিল আগুন। বিপদ টের পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। বারবার খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কথা বলেন দমকল কর্মীদের সঙ্গে। এদিন ঘটনাস্থলে যান পুলিশ সুপার বিনীত গোয়েলও। তার কিছুক্ষণ পর বেলা দেড়টা নাগাদ অবশেষে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। জানা গিয়েছে, এই অগ্নিকাণ্ডের তদন্তের জন্য মেয়রকে হাইপাওয়ার কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শহরের ঘিঞ্জি এলাকায় এ ধরনের যে সমস্ত কারখানা রয়েছে, সেগুলি যথাযথ অগ্নি সুরক্ষা মেনে চলছে কি না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । ফিরহাদ জানান, এই কমিটির মাথায় থাকবে অগ্নি-নির্বাপন বিভাগ । কমিটির অনুসন্ধানের ভিত্তিতে আগামী দিনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে । যদি দেখা যায়, ঘিঞ্জি এলাকায় কারখানা চালানোর ক্ষেত্রে অগ্নিসুরক্ষা মানা হয়নি, তাহলে মালিকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপও করা হবে ৷ অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি যে একেবারেই হালকা ভাবে নেওয়া হচ্ছে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মেয়র ৷