বিদেশ

বাংলাদেশে বাঁদরের উপর ‘বঙ্গভ্যাক্স’ টিকার পরীক্ষায় ফল মিলছে!

বাংলাদেশে লাগাতার বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে পশুর শরীরে ট্রায়ালের অনুমোদন পেল বাংলাদেশের দেশীয় ভ্যাকসিন ‘বঙ্গভ্যাক্স’। জানা গিয়েছে, রাজধানী ঢাকার অদূরে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে ধরে আনা ৫৬টি বাঁদরের শরীরে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড’ উদ্ভাবিত করোনার টিকা বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ১ অগাস্ট থেকে শুরু হওয়া এই ট্রায়াল চলবে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ। ট্রায়ালে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে মানবদেহে টিকার কার্যকারিতা প্রয়োগের (হিউম্যান ট্রায়াল) জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) কাছে আবেদন করবে গ্লোব। সোমবার সংবাদমাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন গ্লোব বায়োটেকের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি অপারেশনসের ব্যবস্থাপক মহম্মদ মহিউদ্দিন। গত ২২ জুন গ্লোব বায়োটেককে চিঠি দিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বাঁদর অথবা শিম্পাঞ্জির ওপর টিকার ট্রায়াল করতে বলে বিএমআরসি। বাঁদরগুলি ধরতে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের তোপের মুখে পড়েছিলেন গ্লোব বায়োটেকের কর্মীরা। সেই সঙ্গে বন্য প্রাণী গবেষণার কাজে ব্যবহারের সমালোচনাও হয়েছে। গ্লোব বায়োটেকের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বাঁদরের ওপর টিকার পরীক্ষার জন্য বিদেশে চেষ্টা করেছেন তাঁরা। ভারত বলেছে, জিটুজি পদ্ধতিতে আবেদন করার জন্য। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য, কিন্তু কোনও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বলছে, এমআরএনএ টিকার বানরের ওপর পরীক্ষার দরকার নেই, কিন্তু বিএমআরসি বলছে, করা লাগবে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসরণ করে বন বিভাগের অনুমোদন নিয়ে বাঁদর সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করে ট্রায়াল শুরু করা হচ্ছে। ড. মহিউদ্দিন বলেন, “বিএমআরসি হতে আমাদের কাছে চিঠি আসে যে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পূর্বে বানর অথবা শিম্পাঞ্জিতে টিকাটির ট্রায়াল সম্পন্ন করতে হবে। আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসরণ করে বন বিভাগের অনুমোদন নিয়ে বানর সংগ্রহ করেছি এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বানরের উপর পরীক্ষা করছি। তিনি বলেন, “১ অগাস্ট ট্রায়াল শুরু হয়েছে, সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। করোনাভাইরাস যে ধরণটা সংক্রমণ হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমরা আশা করি, বঙ্গভ্যাক্সও কার্যকর হবে।” পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শেষের পর ফলাফল গণমাধ্যমে জানানো হবে বলে তিনি জানান। ‘এনিমেল ট্রায়ালে’ কার্যকর অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন মহিউদ্দিন। “আমাদের টিকাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর একটি ডোজেই এনিম্যাল ট্রায়ালে কার্যকর অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আমরা আশা করছি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেও অনুরূপ ফলাফল পাওয়া যাবে।” তিনি জানান, এই টিকা ৪° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১ মাস এবং -২০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৬ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে।