রবিবার রাজ্যসভায় হইচইয়ের জন্য সোমবার আট সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। তার পর সংসদের বাইরে ধরনায় বসেন। সোমবার রাতভর চলল সেই ধরনা। এদিন সকালে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান তাঁদের চা দিতে গেলে প্রত্যাখান করলেন আট জন। তার পরেই ডেপুটি চেয়ারম্যানের পাশে দাঁড়ালেন মোদি। রাতভর ধরনার পর মঙ্গলবার সকালে আট সাংসদের জন্য চা নিয়ে গেছিলেন ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ। কাপে ঢেলে চা এগিয়ে দিলে তা নিতে অস্বীকার করেন আট সাংসদ। তাঁরা বলেন, ডেপুটি চেয়ারম্যান ‘কৃষক–বিরোধী’। এর পরই হরিবংশের পাশে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন সকালে তিনি টুইটারে লিখলেন, ‘দিন কয়েক আগে যাঁরা আক্রমণ এবং অপমান করেছিলেন, তাঁরাই ধরনায় বসলে ব্যক্তিগতভাবে চা দিতে গেছিলেন, এর থেকেই বোঝা যায় হরিবংশজি কত বিনীত, কত বড় হৃদয় তাঁর। এটা তাঁর মহানুভবতাই প্রমাণ করে। আমি ভারতবাসীর সঙ্গে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’ সংসদের বাইরে ধরনায় বসা ওই আট জনের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী সাংসদরা। ধরনাস্থলে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবগৌড়া, এনসিপি নেতা ফারুক আবদুল্লা, কংগ্রেসের আহমেদ প্যাটেল, সপা–র জয়া বচ্চন। তাঁদের সঙ্গে চার ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। দু’টি ফ্যান, কম্বল, মশা তাড়ানোর ওষুধ নিয়ে রাত কাটিয়েছেন তাঁরা। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক জানালেন, বিরোধী সাংসদরা নিজেদের বাড়ি থেকে তাঁদের জন্য খাবার এনে দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা রিপুন বোরা, সিপিএম-এর করিম আবার ডায়বেটিসে আক্রান্ত। বয়স ৬৫ বছরের বেশি। তাই তাঁদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। একটি অ্যাম্বুল্যান্স সব সময় দাঁড়িয়ে রয়েছে। রবিবার রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে যায় জোড়া কৃষি বিল। সেই নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের ডেরেক ও ব্রায়েন, দোলা সেন সহ বিরোধী সাংসদরা। ডেরেক ওয়েলে নেমে যান। ডেপুটি চেয়ারম্যানের মাইক কেড়ে নিতে যান। রুল বুক ছিঁড়তে গেছিলেন বলেও জানা গেছে। সোমবার ডেরেক সহ আট সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। সেটিও খারিজ করেন চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডু।
তৃণমূলের ডেরেক, দোলা সেন, কংগ্রেসের রিপুন বোরা, রাজীব শতাভ, সৈয়দ নাজির হুসেন, আপ–এর সঞ্জয় সিং, সিপিএম–এর কে কে রাগেশ, ইলামারান করিম সাসপেন্ড হন। তাঁরা সকলেই কক্ষ ছাড়তে অস্বীকার করেন। শুরু হয় হইচই। পাঁচ-পাঁচবার মুলতুবি হয় অধিবেশন। এর পর সাসপেন্ড হওয়া সাংসদরা বাইরে বাগানে রাতভর ধরনায় বসেন। এদিন সকালে ডেপুটি চেয়ারম্যান তাঁদের চা দিতে গেলে শুরু হয় নতুন বিরোধ।