স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ছাড়া মাত্র ৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থাকবে দেশে। বাদবাকি ৮ টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকেই বেসরকারিকরণ করার লক্ষ্য নিয়েছে মোদি সরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গুলির পরিচালন ব্যবস্থাকে কর্পোরেট ধাঁচের করে তোলার জন্য ধীরে ধীরে ব্যাংক বেসরকারিকরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আরও কিছু ব্যাংক-কে সংযুক্তিকরণের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে খবর। তাছাড়া আসছে স্বেচ্ছাবসর সংক্রান্ত তাৎপযপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ইতিমধ্যে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া নতুন স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ঘোষণা করেছে। অন্য কয়েকটি ব্যাংকের ক্ষেত্রেও এই স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প চালুর প্রস্তুতি চলছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যাংক সংস্কার সংক্রান্ত একটি ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে সরকারকে জমা দিয়েছে নীতি আয়োগ। এর আগে চলতি আর্থিক বছরেই ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক-কে পরস্পরের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে চারটি ব্যাঙ্কে পরিণত করা হয়েছিল। এবার ব্যাঙ্কের সংখ্যা ও ব্যাংকিং সেক্টরের আয়তন আরও কমানো হবে। সরকার চাইছে, সরাসরি চারটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যাংক থাকবে সরকারের হাতে। সেগুলি হল, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক, ব্যাংক অব বরোদা এবং কানাড়া ব্যাংক । চলতি আর্থিক বছরের মধ্যেই পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাংক, ব্যাংক অব মহারাষ্ট্র, ইউকো ব্যাংক ও আইডিবিআই ব্যাংকের যে শেয়ার সরকারের হাতে রয়েছে তা বেসরকারি সংস্থার কাছে দ্রুত বিক্রি করার নির্দেশ এসেছে খোদ পিএমও থেকে। এর আগে ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক-কে সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে ১২টিতে নামিয়ে এনেছিল কেন্দ্র। এখন শোনা যাচ্ছে, এগুলি ছাড়াও বাকি কিছু ব্যাঙ্কের অংশীদারিত্ব বিক্রির মাধ্যমে বেসরকারিকরণ হবে। প্রাথমিকভাবে ২৬ শতাংশ শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করা হবে। বাকি অংশ থাকবে সরকারের হাতে। কিন্তু এই বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত না হলে সেগুলিও সংযুক্তিকরণ করে দেওয়া হবে চারটি প্রধান ব্যাঙ্কের সঙ্গে। তবে এসব হবে স্বেচ্ছাবসর প্ল্যানের পর। ব্যাংকিং সংস্কারের অন্যতম প্রধান পরিকল্পনা হতে চলেছে স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প। স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ইতিমধ্যেই সেকেন্ড ইনিংস ট্যাপ ভলান্টারি রিটায়ারমেন্ট স্কিম ঘোষণা করেছে। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস থেকে এই প্রকল্প তিন মাসের জন্য চালু থাকবে। এই স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পে যে আগ্রহীরা আবেদন করবেন, তাঁদের যতদিন চাকরির মেয়াদ রয়েছে, সেই সময়সীমার মোট প্রাপ্য বেতনের ৫০ শতাংশ দেওয়া হবে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ হিসেবে। সারা দেশে এসবিআই-র প্রায় আড়াই লক্ষ কর্মী রয়েছেন। করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউন পর্বে অনেক কর্মীই নিয়মিতভাবে অফিসে যাতায়াত করতে পারছেন না। তাছাড়া একটি শহর থেকে অন্য শহরে বদলি প্রক্রিয়াও আটকে যাচ্ছে। এই কারণে গত পাঁচ মাসে স্বেচ্ছা অবসর সংক্রান্ত আবেদন জমা পড়ার প্রবণতা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ব্যাংকই বয়স্ক এবং অসুস্থ কর্মী ও অফিসারদের স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণের বিকল্প দিচ্ছে।