গ্রন্থাগার অনেক থাকলেও নেই গ্রন্থাগারিক বা কর্মী। আর সেই কারণেই তালা পড়েছে খোদ রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রীর নিজের জেলা পূর্ব বর্ধমানের প্রায় ১২টি গ্রন্থাগ্রারে। গোটা রাজ্যের হিসেব ধরলে সংখ্যাটা হবে ৪৯০। কর্মীর অভাবেই রাজ্যের সর্বত্রই ধুঁকছে গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলি। তা নিয়ে যারপরনাই হতাশ বইপ্রেমীরা। বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা রাজ্য সরকারের সমালোচনায় মুখর হলেও গ্রন্থাগার মন্ত্রীর দাবি, কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে, শীঘ্রই সমস্যা মিটবে। অন্তহীন জ্ঞানের উৎস হল বই। গ্রন্থাগার অর্থাৎ লাইব্রেরি হল সেই বইয়েরই আবাসস্থল। বাঙালির বই পড়ার আগ্রহ থেকেই এরাজ্যে দেড় হাজারের মতো গ্রামীণ গ্রন্থাগারের পথ চলা শুরু হয়। তার মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১৫১টি গ্রন্থাগার রয়েছে। রাজ্যের গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের এই দেড়শো গ্রন্থাগার পরিচালনার জন্যে সরকারিভাবে প্রথম থেকেই ৩৪০ জন স্টাফ অনুমোদন করা হয়েছিল।
শুরু থেকে তাঁরাই দায়িত্ব সামলে এসেছেন বছরের পর বছর ধরে। কিন্তু বর্তমানে গ্রন্থাগারিক ও গ্রন্থাগার কর্মী মিলিয়ে ২৬২ জন কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন। তাঁদের সেই শূন্য পদে নতুন করে আর নিয়োগ হয়নি। ফলে এখন পূর্ব বর্ধমান জেলায় কর্মরত গ্রন্থাগারিক ও গ্রন্থাগার কর্মী মিলিয়ে সংখ্যাটা মাত্র ৭৮ জন। শুধু এজেলাই নয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রন্থাগারে কর্মীর অভাবে শিকেয় পরিষেবা। গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে ৪ হাজারের বেশি গ্রন্থাগার কর্মীর পদ এখনও ফাঁকা পড়ে রয়েছে। প্রায় হাজারের বেশি গ্রন্থাগারিক (লাইব্রেরিয়ান) পদ ফাঁকা রয়েছে। এত বিশাল সংখ্যক গ্রন্থাগার কর্মীর ঘাটতির কারণেই কার্যত ধুঁকছে পূর্ব বর্ধমান সহ গোটা রাজ্যের গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলি। কর্মীরা জানিয়েছেন, গ্রন্থাগারগুলির অচলাবস্থা কাটার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল তৃণমূল সরকার তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর। গত বছরের জুলাই মাসে রাজ্য সরকার শূন্যপদে নিয়োগের সিদ্ধান্তও নেয়। ২০২১-এর আগষ্ট মাস থেকে গ্রন্থাগারিকের শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে রাজ্যের গ্রন্থাগার দফতরের তরফে ঘোষণা করা হয়েছি। প্রথম দফায় ৭৩৮ টি গ্রন্থাগারিক শূন্য পদে নিয়োগের কথা জানানো হয়েছিল। রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরিও সেকথা সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন।


