পারিবারিক অশান্তি মেটাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হলেন শাসক দলের বুথ সভাপতি। তাঁর বাঁ হাত ভেদ করে বুকে আটকে রয়েছে গুলি।গুরুতর জখম অবস্থায় গুলিবিদ্ধ বুথ সভাপতি সাহাদুল ইসলামকে (৩২) নিয়ে আসা হয়েছে বারাসত মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপতালে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যমগ্রাম থানার রোহণ্ডা পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেল, তা ধৃতকে জেরা করে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,রিয়াজুলের সঙ্গে তাঁর পরিবারের অশান্তি চলছিল দীর্ঘদিন ধরে।প্রায়ই সে তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মাকে খুনের হুমকি দিত বলে অভিযোগ। অসহায় দম্পতি সমস্ত বিষয়টি জানিয়েছিলেন রোহন্ডা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মসিয়ার রহমান এবং বুথ সভাপতি সাহাদুল ইসলামকে। বুধবার রাতে পারিবারিক সমস্যা মেটাতে তৃণমূল নেতারা গিয়েছিলেন রিয়াজুলের বাড়িতে। অভিযোগ,সেই সময় বাড়ির দোতলা থেকে হঠাৎই সাহাদুলকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় রিয়াজুল ইসলাম। সাহাদুলের বাঁ হাতে গুলি ভেদ করে বুকে লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় তড়িঘড়ি ওই তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা নিয়ে আসেন বারাসত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সূত্রের খবর,পরে সাহাদুলের অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে। রাতেই গুলিবিদ্ধ ওই তৃণমূল নেতার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে,সঙ্কট এখনও কাটেনি বলেই খবর হাসপাতাল সূত্রে। এই প্রসঙ্গে গুলিবিদ্ধ তৃণমূলের বুথ সভাপতি সাহাদুল ইসলাম বলেন,”আমি,পঞ্চায়েত সদস্য মসিয়ার রহমান সহ বেশ কয়েকজন এদিন রাতে রিয়াজুলের বাড়িতে গিয়েছিলাম পারিবারিক সমস্যা মেটাতে। ওই সময় ছাদ থেকে আমাদের লক্ষ্য করে গালিগালাজ করতে থাকে রিয়াজুল। ওকে নেমে আসতে বলতেই পরপর তিনটি গুলি চালায়। দুটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। একটি গুলি আমার বাঁ হাতে লেগেছে।” স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মসিয়ার রহমান বলেন,”রিয়াজুলের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি কোথা থেকে এল জানি না। সাহাদুল গিয়েছিল রিয়াজুলের বাড়িতে পারিবারিক দ্বন্দ্ব মেটাতে। তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। আমরা দোষীর কঠোর শাস্তি চাই।” এদিকে, এই বিষয়ে সাহাদুলের মামা মেহেতাব হোসেন বলেন,”বাবা ও ছেলের দ্বন্দ্ব মেটাতে গিয়েছিল ভাগ্নে। রিয়াজুল তাঁর বৃদ্ধ বাবা মাকে খেতে দেয় না। বিভিন্ন সময়ে হুমকি ও শাসানি দিত। আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখাত। বৃদ্ধ দম্পতির পারিবারিক অশান্তির সমাধান করতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটল।” অন্যদিকে,বিষয়টি নিয়ে বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন,”অভিযুক্তকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই যুবক অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়েছিল পারিবারিক সমস্যা মেটাতে। তখনই বাড়ির উপর থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। অভিযুক্তের কাছে কী ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র এল, তা তাকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।”
