আনুগত্য নয়। দলে পারফরম্যান্সই শেষ কথা। যার জেরে রাজ্য জুড়ে বদল হতে পারে তৃণমূল জেলা সভাপতি ও পুর চেয়ারম্যান পদে। বৃহস্পতিবার নিজের জন্মদিনের দিন অনুরাগীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কেক কাটার পর এই বার্তাই পাওয়া গিয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির থেকে। তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কলকাতা বাদে গোটা বাংলা জুড়ে বেশ কিছু জায়গায় পুর চেয়ারম্যান পদে বদল আনা হবে। বদল করা হবে জেলা সভাপতি পদেও। গোটাটাই হবে তাঁদের কাজ বা পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে। এবিষয়ে তিনি তাঁর সুপারিশের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রায় দু’বছর জেল হেফাজতে থাকার পর বীরভূমে ফিরেছেন অনুব্রত মণ্ডল। জেলা সভাপতি পদে দায়িত্ব সামাল দিচ্ছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে দলীয় কাজকর্ম চালাতে বীরভূমে দলের তরফে তৈরি করা হয়েছিল কোর কমিটি। অনুব্রত ফিরে আসার পরেও এখনও সেই কমিটি রেখে দেওয়া হয়েছে। এদিন অভিষেক বলেন, এবছর লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমে যেহেতু কোর কমিটির নেতৃত্বে দল ভালো ফল করেছে তাই এই কমিটি রেখে দেওয়া উচিত বলেই তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন। প্রাথমিক থেকে শীর্ষ, দলে মজবুত সংগঠন নিয়ে বরাবর জোর দিয়েছেন অভিষেক। গত ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়েও তিনি সেই বিষয়টি তুলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, তিন মাসের মধ্যে পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে প্রশাসনিক পদে এবং দলীয় স্তরে বেশ কিছু বদল আনা হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির মাধ্যমে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, গোটা রাজ্য জুড়ে ঘুরেছেন অভিষেক। জায়গায় জায়গায় প্রার্থী নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সংগঠন নিয়ে আলোচনা করেছেন স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। খুটিয়ে খুটিয়ে জানতে চেয়েছেন জেলার সংগঠন নিয়ে। যার অর্থ সংগঠনকে আরও মজবুত করে গড়ে তোলা। বিভিন্ন পঞ্চায়েতে প্রার্থী হিসেবে তুলে এনেছেন নতুন মুখ। নির্বাচনের পর দলের তরফে বদল করা হয়েছে প্রধান বা উপপ্রধান পদেও। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জোর দিয়েছেন সরকারি কাজে আরও গতি বাড়াতেও। স্থানীয় স্তরে কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন জনগণের সঙ্গে আরও নিবিড় যোগাযোগ বাড়িয়ে তুলতে। আরজি কর-এর ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্না কর্মসূচি তুলতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নিজে ছুটে গিয়েছিলেন তাঁদের কাছে। তাঁদের এই আন্দোলনের পিছনে বাম বা অতিবাম শিবিরের ভূমিকা তুলে একের পর এক কটাক্ষ ভেসে এসেছে শাসক শিবিরের থেকে। এদিন অভিষেক বলেন, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে বামেরা যে ভূমিকা পালন করেছে তাতে তাঁদের ফল ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে আরও খারাপ হবে।