পঞ্চায়েত ভোটের আবহে আরও একবার ফাঁস হয়ে গিয়েছে পদ্মশিবিরের বেহাল দশার ছবি। দল যেমন সব জায়গায় যেমন প্রার্থী দিতে পারছে না, কার্যত প্রার্থী খুঁজেই পাচ্ছে না, তেমনি রাজ্যের কোনও জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি দখলের মতো অবস্থাতেও নেই বঙ্গ বিজেপি। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে তাঁরা বাংলায় না আসার সিদ্ধান্তই নিলেন। তাঁরা মানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। সন্দেহ নেই তাঁদের এহেন সিদ্ধান্ত বঙ্গ বিজেপির কাছে বড়সড় ধাক্কা হয়ে উঠল। জানা গিয়েছে, চলতি জুন মাসে তো বটেই, আগামী জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলায় আসার কোনও পরিকল্পনা নেই। বিজেপির তরফে আগে সফর পরিকল্পনা ঘোষণা করা হলেও, পঞ্চায়েত নির্বাচন না-মেটা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডারও রাজ্যে আসার সম্ভাবনা নেই। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত, গ্রামবাংলার এই ভোটে দলের রাজ্য নেতাদেরই প্রচারের দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু তাই নয়, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্তও নিয়েছে যে এই ভোটের প্রচারে দলের অন্য কোনও শীর্ষ নেতা, অন্য রাজ্যের নেতা বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা অংশ নেবেন না। এমনকি মোদী সরকারের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলায় যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল, তা-ও জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। কিন্তু কেন এতটা মুখ ফিরিয়ে থাকা? জানা গিয়েছে, বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মিথ্যার মহাজালের জন্যই এই পরিস্থিতি। বাংলা থেকে পদ্মশিবিরের নেতারা দিল্লি গিয়ে একের পর এক বড় বড় ডায়লগ দিয়ে এসেছেন। তাঁদের দাবি, বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে দল নাকি বেশিরভাগ জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি আর গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতবে। কিন্তু এই দাবি যে সঠিক নয়, সেটা সঙ্ঘের নেতৃত্ব যেমন জানিয়ে দিয়েছে তেমনি দলের পর্যবেক্ষকেরাও জানিয়েছেন। কার্যত এই ভোটেও যে একুশের নির্বাচনের মতোই বিজেপি গোহারান হারতে চলেছে সেটা বুঝেই আর এখন বাংলা মুখো হতে চান না মোদি-শাহ-নাড্ডারা। কার্যত বাংলার বুকে পঞ্চায়েত ভোটে দলের আবার গোহারান হারার কোনও দায়িত্বই তাঁরা আর নিজেদের কাঁধে নিতে চান না। বরঞ্চ তাঁরা এই ভোটের মাধ্যমে দেখে নিতে চাইছেন যে বঙ্গ বিজেপির দৌড় এখন ঠিক কোন অবস্থায় আছে।