কলকাতা

আইনজীবী হত্যা মামলায় স্ত্রী অনিন্দিতার যাবজ্জীবন

আইনজীবী রজত দে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হল তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতা পালকে। বারাসত আদালতের তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে। নিউটাউনে গত বছর নভেম্বর মাসের ঘটনায় অনিন্দিতা স্বীকার করেছিলেন, ‘আমিই রজতকে খুন করেছি, আত্মহত্যা নয়, শ্বাসরোধ করেই মারা হয়েছে রজতকে।’ আইনজীবীর স্ত্রীর এই স্বীকারোক্তির পরই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল নিউটাউন থানার পুলিশ। তার পরে দীর্ঘদিন ধরে চলে মামলা। দোষ স্বীকার করলেও আজ আদালতে চূড়ান্ত রায় শুনেই চিত্‍কার করে ওঠেন অনিন্দিতা। তাঁর আইনজীবী সোহিনী অধিকারী সওয়াল করেন, অনিন্দিতার ৩ বছরের সন্তান কয়েছে, মায়ের ফাঁসি হলে সে পুরোপুরি অনাথ হয়ে যাবে। তাই বিচারক যেন সর্বোচ্চ শাস্তি না দেন তাঁর মক্কেলকে। তবে খুনের ঘটনার প্রথম থেকেই অনিন্দিতা বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেছিলেন। টানা জেরায় তাঁর অসঙ্গত উত্তর সন্দেহ জাগায় তদন্তকারীদের মনে। অনিন্দিতা-রজতের দাম্পত্য সম্পর্কও ভাল ছিল না বলে স্পষ্ট হয়। শুধু তাই নয়, পুলিশ জানিয়েছিল, অনিন্দিতা সাত বার বয়ান বদল করেন। একবার বলেন বিছানাতেই চাদর জড়িয়ে আত্মহত্যা করেন রজত, একবার বলেন বসার ঘরে সিলিং থেকে ঝুলছিলেন। শেষমেশ জেরার চাপে ফোনের চার্জার স্বামীর গলায় জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার কথা স্বীকার করে নেন অনিন্দিতা। অনিন্দিতার সাজা ঘোষণার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশ লিখেছে, ”প্রথমে আমাদেরও মনে হয়েছিল ঘটনাটা আত্মহত্যারই। কিন্তু তার পর আরও তলিয়ে ভাবতে শুরু করি। মনে হয়, অনিন্দিতাকে আরও জেরা করা দরকার। কারণ, ওঁর জবাবে কোথাও কোথাও অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছিল। তার পরেই সত্যিটা বেরিয়ে আসে।” ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর নিউটাউনের ডিবি ব্লকে নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় আইনজীবী রজত দের মৃতদেহ। তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রথম থেকেই দাবি করেছিলেন অনিন্দিতা। কিন্তু পরে রজতের দেহের ময়নাতদন্তে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। বারবার জেরা করে অনিন্দিতার বয়ানেও মেলে বহু অসঙ্গতি। এরপরেই ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ রজতকে খুনের অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতাকে। অনিন্দিতা নিজেও একজন আইনজীবী।