দেশ

স্ত্রী পর্নোগ্রাফি দেখা, মাস্টারবেট করা ‘অপরাধ’ নয় ! জানিয়ে দিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট

স্ত্রী যদি পর্নোগ্রাফি দেখেন, তাহলেও মোটেও সেই কারণে তাঁকে ডিভোর্স দেওয়া যায় না বা এই ঘটনা কখনও বিবাহ বিচ্ছেদের যুৎসই আইনি কারণ হিসাবে বিবেচিত পারে না। একইসঙ্গে, স্ত্রী যদি স্বমেহন (মাস্টারবেট) করেন, তাহলেও তার জন্য ডিভোর্সের আবেদন করা যায় না। কারণ, একজন নারী বিবাহিতা হলেই তিনি তাঁর যৌন স্বাধীনতা ত্যাগ করেন না। একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। মাদ্রাস হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ জানিয়েছে, পুরুষদেরই কেবল হস্তমৈথুনের অনুমতি রয়েছে, এমনটা নয় ৷ মহিলাদের মাস্টারবেটকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না । ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তি নিম্ন আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা রুজু করেছিলেন। যা নিম্ন আদালত গ্রাহ্য করেনি। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। বুধবার (১৯ মার্চ, ২০২৫) সেই মামলার প্রেক্ষিতে উপরোক্ত পর্যবেক্ষণ করেছে উচ্চ আদালত।এই মামলার আবেদনকারী ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগ এনেছিলেন। এবং সেই নৃশংসতার স্বপক্ষে প্রমাণ ও উদাহরণ হিসাবে তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী পর্নোগ্রাফি দেখেন এবং পর্নোগ্রাফি দেখার সময় স্বমেহন করেন। কিন্তু, আদালত এই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। একইসঙ্গে, আদালতের পর্যবেক্ষণ হল – ‘আত্মতৃপ্তি কোনও নিষিদ্ধ ফল নয়!’সংবাদ সংস্থা এএফপি এই ঘটনায় যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে আদালতের পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘পুরুষ যে হস্তমৈথুন করে, সেটা একটি সর্বজনীন সত্য। সেক্ষেত্রে একইভাবে কোনও নারী স্বমেহন করলেও তাঁকে কাঠগড়ায় তোলা যেতে পারে না।’ আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ হল, একজন নারী বিবাহের পরও তাঁর ব্য়ক্তি স্বাতন্ত্র ও স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেন না। বিবাহের পরও ‘একজন ব্যক্তি হিসাবে, একজন নারী হিসাবে, তিনি তাঁর মৌলিক পরিচয় মোটেও হারিয়ে ফেলেন না। এবং সেই পরিচয় তাঁর বৈবাহিক সঙ্গীর অবস্থা বা অবস্থানের দ্বারা নির্দিষ্ট হয় না।’ বিচারপতি বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ ছবি ছাড়া একান্তে পর্নোগ্রাফিক ছবি দেখা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না । এটি নৈতিকভাবে ন্যায্য। আবেদনকারীর স্ত্রী’র স্বমেহনকে বিবাহবিচ্ছেদের অজুহাত হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। যে পরিবেশে সমাজ পুরুষদের স্বমেহনকে গ্রহণ করে, সেখানে মহিলাদের স্বমেহনকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না । বিয়ের পর মহিলাদের গোপনীয়তার স্বাধীনতা থাকে, ‘স্ত্রী’ হলেও স্বাধীনতা চলে যায় না ৷ এমনকী যদি আবেদনকারীর অভিযোগগুলি সত্যিও হয়, তবুও আইনের অধীনে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য এগুলি ভিত্তি নয় ।’’