জেলা

বান্ধবীর সঙ্গে সমকামী সম্পর্কে বাধা পরিবারের, বিয়ের ২দিন আগে চরম সিদ্ধান্ত নিলেন তরুণী

বান্ধবীর সঙ্গে মেয়ের জমে উঠেছিল প্রেম। নিজেরা একে অপরকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সমকামী সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার। অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছিল মেয়ের। বিয়ের তিন দিন আগে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হলেন তরুণী। স্কুলেই পরিচয়। ঘোরাফেরা, খাওয়াদাওয়া। ওঠাবসাও একসঙ্গেই। পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন ভালোবাসায়। একজন আরেকজনকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবার। অজুহাত, তাঁরা সমকামী। দু’জনেই পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা। একজনের বাড়ি গলসির খানোতে। সম্পর্ক ভাঙতে বাড়ির লোক তাঁকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গলসির বৈঁচাগ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আত্মঘাতী তরুণীর। সমকামী সম্পর্ক হওয়ায় সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার। মেয়েকে বুঝিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব দেয় বান্ধবী। তাই বাড়ির মেয়ে যাতে ওই তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন, সেই কারণে ফোনে রিচার্জ করে দেওয়া হত না। কিন্তু বৈঁচাগ্রামের ওই প্রেমিকা আত্মঘাতী তরুণীর ফোনে রিচার্জ করে দিতেন এবং যোগাযোগ রাখতেন। হঠাৎ সকালে বর্ষা কীটনাশক খায়। তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে রেফার করা হয় কলকাতায়। আর্থিক সমস্যার কারণে কলকাতা থেকে নিয়ে এসে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার রুজু করে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এদিন বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। মৃত তরুণীর আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা বলছেন, “এমনিতে দুই বান্ধবীর সখ্যতা থাকতেই পারে। কিন্তু দিন দিন বর্ষার সঙ্গে ওই বান্ধবীর সম্পর্ক অন্যরকম ঠেকছিল। তাদের মধ্যে সমকামের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে জানতে পেরে কঠোর হয় বর্ষার পরিবার। তারা বর্ষাকে বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা বন্ধ করতে বলে। সেজন্য বর্ষার ফোন রিচার্জ করা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি তার পাত্র দেখা হয়। কিন্তু তার মাঝেই এই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়ে বসল বর্ষা”।