ক্রাইম জেলা

আদালতে গোপন জবানবন্দি দিল দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের নির্যাতিতার পরিবার

বালুরঘাট জেলা আদালতে শুক্রবার গোপন জবানবন্দি দিলেন কুমারগঞ্জের নির্যাতিতা যুবতীর পরিবার। জমা দিলেন সাক্ষ্য প্রমাণও। মৃতার পরিবারের পাশাপাশি একজন কাপড় ব্যবসায়ীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হল এ দিন। কুমারগঞ্জে যুবতীকে গণধর্ষণ করে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনায় জবানবন্দি দিতে এ দিন বালুরঘাট জেলা আদালতে আসেন মৃতার মা ও দাদা এবং ফুলবাড়ির ওই দোকানের কর্মী। কুমারগঞ্জের বেলঘর এলাকায় যুবতীকে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে ধৃত তিনজন বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। অভিযুক্তদের দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। এ বার ওই ঘটনায় গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য মৃতার মা, দাদা এবং ওই কাপড় ব্যবসায়ীকে শুক্রবার বালুরঘাটের জেলা আদালতে নিয়ে আসে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। সেখানে বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। ঘটনার আগে মেয়েটিকে নিয়ে কাপড়ের দোকানে গিয়েছিল অভিযুক্তরা। মৃত যুবতীর বাড়ির অদূরে ফুলবাড়ি বাজারে ওই কাপড়ের দোকান। দোকানের মালিক জানান, গত শনিবার বেলা আড়াইটা নাগাদ তাঁর দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিল মেয়েটি। মিনিট পাঁচেক পর বাইক নিয়ে তিনজন যুবক আসে সেখানে। তাদের মধ্যে দুই যুবক মেয়েটিকে নিয়ে তাঁর দোকানে ঢোকে। একটি বাটিক প্রিন্টের চাদর এবং একটি রুমাল কেনে তারা। মেয়েটি চাদর নিলেও রুমালটি নিজের কাছে রাখে এক যুবক। আর এক যুবক ৫০০ টাকার নোট বের করে দেয়। দাম কেটে নিয়ে বাকি ৩০০ টাকা ফিরিয়ে দেন তিনি। মেয়েটির মুখ খোলা থাকলেও ছেলেগুলোর মুখ ঢাকা ছিল। তাদের বাইকটি ছিল নীল রঙের। এ নিয়ে এ দিন আদালতে বয়ান দিয়েছেন তিনি। জবানবন্দি দিতে আসা মৃতার ভাই বলেন, ‘বাড়িতে এসে প্রায়ই মাহাবুব বোনের উপর অত্যাচার করত। বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় তাকে অভিযুক্তরা মারার ছক করে। তিন অভিযুক্ত মাহাবুর মিঁয়া, গৌতম বর্মন এবং পঙ্কজ বর্মন সবসময় একসঙ্গেই থাকত।’ দ্রুত এই মামলায় চার্জশিট দেওয়া হবে বলে জানান জেলার পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। উল্লেখ্য, দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের এক কিশোর বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বারবার কিশোরীর বাড়িতে ঢুকে মারধর করত ধৃত মূল অভিযুক্ত মহাবুর মিঞা। সম্প্রতি কিশোরীর বিয়ে ঠিক হওয়ায় অত্যাচার বাড়তে থাকে। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের নারকীয় ঘটনায় নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই মেয়েকে গণধর্ষণ, তারপর খুন করা হয়েছে। প্রথমে গণধর্ষণ। জ্ঞান হারানোর পর ফের ধর্ষণ। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বার বার গণধর্ষণ, অত্যাচারে অচেতন কিশোরীকে গলা কেটে পোড়াল দুষ্কৃতিরা। কিশোরীর মায়ের দাবি, ধৃতরা পরিচিত। পরিকল্পনা করেই গণধর্ষণ। তারপর খুন করা হয়েছে মেয়েকে। ধৃত মহাবুর মিয়াঁর বিরুদ্ধে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ এনেছেন কিশোরীর মা। ধৃত মহাবুর গোয়ায় কাজ করে। কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, বাড়িতে এলেই বিয়ের জন্য চাপ দিত মহাবুর। বিয়েতে রাজি না হওয়াতেই রাগ ৷ কিশোরীর মায়ের দাবি, সম্প্রতি কিশোরীর অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয় ৷ তারপরেই মহাবুর হুমকি দিতে থাকে ৷ পুলিশে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করে কিশোরীর পরিবার ৷ মহাবুরের পরিবার ক্ষমা চেয়ে নেয় ৷