জেলা

মালদার চাঁচলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত গ্রামবাসীরা

মালদা: ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দু’জনের। জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম দীপক ভুঁইঞা (১৬) এবং দুলিয়া ভুঁইঞা (৫০)৷ ঘটনাটি মালদহের চাঁচোলের রানিদিঘী গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ডায়রিয়ার প্রকোপ ঘরে ঘরে ছড়িয়েছে৷ আক্রান্ত গোটা গ্রাম। সরকারি মতে, ২২ জন আক্রান্ত৷ বেসরকারি মতে সংখ্যাটা অবশ্য বেশি৷ আক্রান্তদের মধ্যে কেউ কেউ ভরতি রয়েছে মালতীপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। অনেকে আবার বাড়িতে থেকেই হাতুড়েদের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা চালাচ্ছেন৷এই ঘটনার খবর পেয়ে চাঁচোল মহাকুমাশাসক, চাঁচোল ২নং ব্লকের বিডিও পঞ্চায়েত সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা গ্রামে পৌঁছতেই বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। চাঁচোল ২ ব্লকের খেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে রয়েছে রানিদিঘী গ্রাম৷ ওই এলাকার একটি পুকুরের জল থেকে ডায়রিয়া ছড়িয়েছে বলে স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ৷ ক্ষোভের সুরে তাঁরা জানান, গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। গ্রামে একটিমাত্র টিউবওয়েল। তাও বেশিরভাগ সময় খারাপ থাকে। ফলে বাধ্য হয়েই পুকুরের জল খেতে হয়। এছাড়া অন্য উপায় নেই। পঞ্চায়েত থেকে ব্লক আধিকারিকদের কাছে টিউবওয়েলের জন্য বহুবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনওরকম ব্যবস্থাই তাঁরা নেননি। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও চিকিৎসক থাকে না। ফলে অসুস্থ হলে পরিষেবা জোটে না। হাতুড়ে চিকিৎসকের ভরসাতে থাকতে হয়।গত সাতদিন ধরে গ্রামবাসীরা ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত। তবুও প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্যকর্তাদের হুঁশ নেই বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। মঙ্গলবার সরকারি কর্তারা গ্রাম পরিদর্শনে গেলে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। চাঁচোলের মহাকুমাশাসক সব্যসাচী রায় জানান, গ্রামে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নেই। শৌচালয়ও পর্যন্ত নেই। দ্রুত এইগুলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেডিক্যাল টিমকে আক্রান্তের পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।রানিদিঘী গ্রামে একটি পুকুর রয়েছে। সেই পুকুর সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৯০টি পরিবারের বসবাস। যাঁরা ওই পুকুরের জল ব্যবহার করেন তাঁদের অভিযোগ।সেই জল থেকেই ডায়রিয়া ছড়িয়েছে গ্রামে৷ পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ার কারণেই জল দূষিত হয়ে গিয়েছে। পানীয় জলের অভাবে বাধ্য হয়ে মানুষকে পুকুরের এই দূষিত জল খেতে হচ্ছে বাধ্য হয়েই। আর তাই গ্রামের দুইজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের। এলাকার হাতুড়েদের সাহায্য নিয়ে বাড়ি বাড়িতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা চলছে। কেননা এখনও পর্যন্ত এলাকায় স্বাস্থ্য দফতরের কোন টিম আসেনি। তার ফলে পুরো গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।