মুর্শিদাবাদ: সপ্তাহ ঘুরতে চলল প্রায়। এখনও রহস্যভেদ হল না জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের। এখনও গ্রেফতার হয়নি কেউ। সন্দেহভাজন হিসেবে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের বাবা অমর পাল ও বন্ধু সৌভিক বণিককে আটক করেছিল পুলিশ। ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর সোমবার ছেড়ে দেওয়া হল বাবাকে। এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সৌভিককে। বিউটি মণ্ডল পালের বাবা সুখেন মণ্ডল দাবি করেছেন, তাঁর মেয়ে, জামাই ও নাতিকে বন্ধুপ্রকাশের বন্ধু সৌভিকই খুন করেছে।মঙ্গলবার বিজয়া দশমীর দিন বেলা ১১টা নাগাদ জিয়াগঞ্জ শহরের লেবুবাগানে বাড়ির ভেতর থেকে ঢুকে খুন করা হয়েছিল প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী বিউটি মণ্ডল পাল ও তাঁদের ৬ বছরের ছেলে বন্ধুঅঙ্গন পালকে। বাড়ির শোওয়ার ঘরের খাটের উপর দেহ মেলে প্রকাশবাবুর। মেঝেতে পড়েছিল তাঁর ছেলের রক্তাক্ত দেহ। পাশের ঘর থেকে মেলে বন্ধুপ্রকাশবাবুর স্ত্রী বিউটির ক্ষতবিক্ষত দেহ।এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যজুড়ে। বন্ধুপ্রকাশবাবু রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকের কর্মী হওয়াতেই তাঁর পরিবারকে শেষ করে দেওয়া হল বলে বিজেপির তরফে অভিযোগ ওঠে। এই হত্যাকাণ্ডের সিবিআই তদন্তের দাবি জানায় বিজেপি। যদিও এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন জেলার পুলিশকর্তারা।খুনের দু’দিন পরেই জেলার এসপি শ্রী মুকেশ জানিয়েছিলেন, খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট না হলেও বেশ কিছু সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। এক আততায়ীকে সে দিন ছুটে পালাতে দেখেছিলেন যাঁরা, এ রকম কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে মৃত বিউটি পালের লেখা একটি নোট ও ডায়েরি উদ্ধার করেছে, সেখানে স্বামীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের টানাপড়েনের ইঙ্গিত মিলেছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। সাগরদিঘি, যেখানে বন্ধুপ্রকাশের আদিবাড়ি, সেখানে জমিজায়গা নিয়ে কিছু সমস্যার কথাও জানতে পারে পুলিশ। প্রথমপক্ষের সন্তান বন্ধুপ্রকাশবাবুর সঙ্গে তাঁর বাবার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সম্পত্তি নিয়ে অতীতে নানা ঝামেলা কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাই এ ব্যাপারে আরও জানতে আটক করা হয়েছিল বন্ধুপ্রকাশবাবুর বাবাকে।টাকা পয়সা নিয়ে গন্ডগোলের আঁচ পেয়ে বীরভূমের সিউড়ি থেকে আটক করা হয় বন্ধুপ্রকাশবাবুর বন্ধু সৌভিক বণিককে। এখনও তাকে জেরা করছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত রহস্যে ইতি টানার মতো কোনও সূত্র মেলেনি বলেই জানিয়েছে পুলিশ।