দিল্লির গত সপ্তাহের হিংসার দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ চেয়ে বিরোধীদের হট্টগোলে সোমবার দফায় দফায় উত্তাল হল সংসদের উভয় কক্ষ। তিন সপ্তাহ বিরতির পর বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে সোমবারই শুরু হয়েছিল সংসদের অধিবেশন। সকাল থেকেই সংসদের উভয় কক্ষে দিল্লি হিংসায় কেন্দ্রের ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ করে স্লোগান, চিৎকার–চেঁচামেচি জোড়েন বিরোধী সাংসদরা। বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম, ডিএমকে, সপা, বিএসপি–র সাংসদরা। সংসদের দুই কক্ষেই এব্যাপারে আলোচনা চেয়ে প্রথমে নোটিস দেন বিরোধী সাংসদরা। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এদিন বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি অনুকূল নয়। পরিস্থিতি উন্নত হওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব তারপর এটা নিয়ে আলোচনার অনুমতি দেব।’ রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, ‘বিষয়টি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ এবং আলোচনা প্রয়োজন।’ এর জন্য তিনি সময়ও দেবেন বলে মন্তব্য করে নাইডু বলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ শান্তি ফেরানো। আমরা দেখব আগে শান্তি ফিরছে তারপর আমরা হিংসা রোখার উপায় নিয়ে আলোচনা করব। তাতে আরও ক্ষেপে ওঠেন বিরোধীরা। গুলাম নবি আজাদ অভিযোগ করেন, দিল্লিতে তিন দিন ধরে হিংসা চলার সময় ‘কেন্দ্রীয় সরকার ঘুমোচ্ছিল।’ বিরোধী সাংসদরা এব্যাপারে মোদি এবং শাহের বিবৃতি দাবি এবং তাঁদের পদত্যাগ দাবি করেন। যদিও মোদি বা শআহ, কারও তরফেই সংসদে এব্যাপারে বিবৃতি দেওয়া হয়নি। উল্টে সংসদ বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি ১৯৮৪–র প্রসঙ্গে নাম না করে কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, ১৯৮৪ সালে ৩০০০ শিখের মৃত্যুতেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরিকে আবেদন করেন তিনি যেন দলীয় সাংসদদের বসতে বলেন যাতে অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে হয়। কিন্তু কংগ্রেস সাংসদরা কর্ণপাত করেননি। চেঁটামেচির মধ্যেই সরাসরি কর বিল ‘বিবাদ সে বিশ্বাস’ ২০২০ বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। বিরোধীদের তুমুল হইহট্টগোলের জেরে দফায় দফায় মুলতুবি হয় উভয় কক্ষের অধিবেশন। তার মধ্যেই কিছু কাজ হলেও বেলার দিকে হইচইয়ের জেরে মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় সংসদের উভয় কক্ষই।