কলকাতাঃ ফলাফল পর্যালোচনার জন্য আজ বৈঠক ডাকেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেন, আমি সবাইকে সময় দিতে পারিনি । যারা জিতেছেন তাদের আগে এলাকায় যাওয়া উচিত। আমি খুব দুঃখিত । পাঁচ মাস ধরে নির্বাচনের কাজ চলছে, তাই কোনও কাজ করা যায়নি। ইর্মাজেন্সি পরিস্থিতি তৈরি করে ভোট করিয়েছে। এরকম জীবনে দেখিনি । কোনও কাজ করতে গেলেই বলছে, সব নির্বাচন কমিশনের অধীনে । আমাদের ৪ শতাংশ ভোট বেড়েছে । আসন হয়তো কমেছে । ওরা সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে জিতেছে । এভরিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ অ্যান্ড ওয়ার । ওরা এসব করে জিতেছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এও অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন ওদের হয়ে কাজ করেছে । আমি তো অবাক হয়ে যাচ্ছি ওরা ২৩টি আসন কেন পেল না ? মোদিজিকে অভিনন্দন । উনি তো বলেছিলেন, ২৩টি আসন
পেয়ে গেছে । পুরোপুরি হিন্দু-মুসলমান করা হয়েছে । ওদের অভিনন্দন জানিয়ে বলছি, এই থিওরি মানি না । ভোট ভাগাভাগি মানি না । এত অহংকার ভালো নয় । এই নির্বাচনে এত টাকা খরচ করেছে বিজেপি, যেকোনও কেলেঙ্কারিকে হার মানিয়ে দেবে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “রাজনীতির স্বার্থে ধর্মকে বেচে দেওয়া হয়েছে । অনেক অভিযোগ দেওয়া হয়েছে । কিছুই হল না । মিডিয়া কন্ট্রোল, নির্বাচন কমিশন কন্ট্রোল, গোটা প্রসেসটাই কন্ট্রোল হয়েছে । এখন তো পাকিস্তানকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও বলেন, আমি মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে চেয়েছিলাম । আমি দলের বৈঠকে বলেছিলাম । তৃণমূল সুপ্রিমো হিসেবে থাকতে চাই । কিন্তু দলের কেউ মেনে নিলেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগে বিরোধীরা সর্বদাই সরব হয়ে এসেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন। তাঁর যুক্তি, তিনি
কখনই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে পারবেন না। তাঁর কাছে হিন্দু-মুসলিম-শিখ-খ্রিস্টান সব ধর্মই সমান। মমতা বলেন, প্রতিটি ধর্মের প্রতি আমার সহনশীলতা রয়েছে। আমার কাছে সবাই মানুষ। তাই আমি ইফতারের আমন্ত্রণ নিই, ইফতারে যাই, এবারেও যাব। এ প্রসঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, যে গরু দুধ দেয় তার লাথি একটু আধটু সহ্য করতেও হয়।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কি বলনে –
- পাঁচ মাস ধরে কোনও কাজ করতে দেওয়া হয়নি। রাজ্যে এমার্জেন্সির মত পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল: মমতা
- সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে ওরা জিতেছে। আমি আগেই অভিনন্দন জানিয়েছি: মমতা।
- পাঁচ মাস ধরে নির্বাচনের কাজ চলছে, তাই কোনও কাজ করা যায়নি: মমতা
- সেটিং একটা হয়েছে। কীভাবে সেটিং হল জানি না: মমতা
- দল চায়নি বলেই আমাকে কাজ করতে হচ্ছে: মমতা
- মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে চেয়েছিলাম। দলের কেউ মেনে নিলেন না: মমতা
- সিপিএম সহ অনেককেই টাকা দিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলেরও অনেককে দিয়েছে। আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি: মমতা
- পাঁচ মাস ধরে কমিশনের দয়ায় আমি মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম: মমতা
- নির্বাচনের সময় কেন বলা হল আমাদের পাকিস্তানের চর? প্রশ্ন মমতার।
- কলকাতা পুলিশ কমিশনার সহ অফিসারদের সরিয়ে টাকা ঢোকানোর সুবিধা হয়েছে বিজেপির: মমতা
- মিডিয়া, কমিশন, পুরো সিস্টেমের কন্ট্রোল ছিল বিজেপির হাতে: মমতা
- নির্বাচন কমিশনে অনেক অভিযোগ জানানো হয়েছে, কোনও লাভ হল না: মমতা
- আমি হিন্দু ঘরের মেয়ে, কিন্তু উগ্র হিন্দুত্ববাদ মানি না। সহনশীলতা থাকা উচিৎ।
- রাজনীতির সঙ্গে ধর্ম মিলবে না: মমতা
- হিন্দু, মুসলিম, শিখদের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি মানব না, তাতে এক থাকতে হলেও থাকব: মমতা
- হিন্দু-মুসলিম-শিখ-খ্রিস্টান সব ধর্মই সমান: মমতা
- অভিনন্দন জানিয়েও বলছি, আপনাদের ধর্মের নামে ভোট ভাগাভাগি আমি মানি না: মমতা