কলকাতা

নবান্নে মমতা-আদানি বৈঠক, রাজ্যে বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনা

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে শিল্পপতি গৌতম আদানির বৈঠকের পরেই রাজ্যে বিনিয়োগের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এই মুহূর্তে ভারতের বৃহত্তম বন্দর ও কার্গো অপারেটর হিসেবে পরিচিত আদানি গ্রুপ। গোটা দেশ জুড়েই নৌ ও জাহাজ-বন্দর ব্যাবসায় আদানির নাম সুবিদিত। সেই সংস্থার কর্ণধার এ বার বৈঠক করে গেলেন রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দফতরে। প্রশাসনিক মহলের খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে বাংলার সমুদ্র বন্দরে বিনিয়োগ করতে চলেছেন বর্তমানে এশিয়ার অন্যতম ধনীতম ব্যক্তি ও তাঁর সংস্থা! সূত্রে খবর, হলদিয়া নৌ-বন্দরের একটি বার্থ তৈরি করা নিয়ে সম্প্রতি নিলাম শুরু হয়েছিল। আর সেখানেই গুজরাটের সংস্থা আদানি গ্রুপ সর্বোচ্চ দর হেঁকেছে বলে শোনা গিয়েছে। হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের এই বার্থ এ বার থেকে আদানি গ্রুপের হাতেই যেতে চলেছে বলে মনে করছে অনেকে। কিন্তু ঠিক কী করতে চলেছে আদানি গ্রুপ। গোটা বার্থের প্রথম থেকে শেষ অবধি পরিকাঠামো তৈরি করাই আপাতত উদ্দেশ্য আদানি গ্রুপের। এই কাজ দুই বছরের মধ্যেই শেষ হবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে যে চুক্তিপত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে এই শর্তের কথাই বলা হয়েছিল। উল্লেখ্য, যে বার্থ তৈরি করা হয়েছে তার সাড়ে তিন থেকে চার মিলিয়ন টনের প্রতি অ্যানাম কার্গো বহন করার ক্ষমতা থাকতে হবে। গোটা বিষয়টি তৈরি কর‍তে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে আদানি গোষ্ঠী। যদি সব কিছু ঠিকঠাক চলে তবে এই হলদিয়া বন্দরের মধ্যে দিয়েই এই রাজ্যে প্রবেশ করতে চলেছেন গৌতম আদানি । পরবর্তীকালে অবশ্য রাজ্যের বাকি বন্দরগুলির ক্ষেত্রে তাঁর একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি হয় কিনা সেটাই এখন দেখার। সূত্রের খবর, খিদিরপুর ডকেও শীঘ্রই তারা বার্থ নিতে পারে। আদানি গ্রুপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মতে আদানি গোষ্ঠীর আওতাধীন আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড বা APSEZ বর্তমানে দেশের বৃহত্তম বন্দর অপারেটর হিসেবে পরিচিত। এই দেশে যে বিপুল কার্গো মুভমেন্ট হয়েছে, তার একের চতুর্থাংশ আদানি গোষ্ঠীর আওতাধীন এই সংস্থার মাধ্যমেই। তাও জানাতে ভোলেনি ওই ওয়েবসাইট। সারা দেশের প্রায় সাতটি রাজ্যের মোট ১৩টি বন্দর বর্তমানে রয়েছে আদানি পোর্টসের হাতে। এই সাতটি রাজ্যের মধ্যে আছে মহারাষ্ট্র , গুজরাত, গোয়া, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ , ওড়িশা ও তামিলনাড়ু। পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ এলে তা অষ্টম রাজ্য হতে পারে। তবে গুজরাতের এই সংস্থার ভোজ্য তেল ও ফুড প্রসেসিংয়ের একটা ইউনিট আছে হলদিয়ায়। সেখানেও প্রচুর কর্মসংস্থান আছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরে অবশ্য উচ্ছ্বসিত গৌতম আদানি। তিনি বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আনন্দিত। পশ্চিমবঙ্গে বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী ২০২২ এপ্রিলে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে যোগদানের জন্যে উন্মুখ হয়ে আছি।” ইতিমধ্যেই মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে সামিটে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।