শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন হাওড়ায় টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ক ৷ বুধবার তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বদলে একগুচ্ছ শর্ত মেনে চলার নির্দেশ দেয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ আদালত জানিয়েছে, আপাতত তিন মাসের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পাচ্ছেন টাকা উদ্ধার কাণ্ডে ধৃত তিন বিধায়ক ৷ প্রসঙ্গত, তাঁরা তিনজনই খাতায়-কলমে কংগ্রেসের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হলেও ইতিমধ্যেই দল তাঁদের সাসপেন্ড করেছে ৷ প্রত্যেকেই জামিন পেয়েছেন ১ লক্ষ টাকার বন্ডে ৷ একইসঙ্গে, আদালতের নির্দেশ, জামিন পেলেও এখনই কলকাতা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে পারবেন না অভিযুক্ত তিন বিধায়ক ৷ তাঁদের থাকতে হবে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহরেই ৷ সেইসঙ্গে, তদন্তকারীদের সবরকম সহযোগিতাও করতে হবে ৷ সপ্তাহে একদিন তিনজনকেই তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে হবে ৷ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে এমএলএ, এমপি কোর্টে ৷ হাইকোর্ট এ দিন তেমনই নির্দেশ দিয়েছে ৷ এদিন মামলার শুনানিতে বিধায়কদের তরফে আইনজীবী মুকুল রোহতাগি বলেন, “টাকা উদ্ধার শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয় ৷ তার জন্য হেফাজতের প্রয়োজন নেই ৷ অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের তিনটি পেট্রোল পাম্প রয়েছে ৷ আরও একজন ব্যবসায়ী ৷ তাঁদের কাছে এই টাকা থাকতেই পারে ৷ তাঁরা আদিবাসী উৎসবের জন্য শাড়ি কিনতে এসেছিলেন ৷” অন্যদিকে, রাজ্যের আইনজীবী শ্বাশতগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “এঁদের (ধৃত বিধায়কদের) জামিন দিলে তদন্ত ব্যাহত হবে ৷ এই মুহূর্তে তদন্ত প্রক্রিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ৷ অভিযুক্তরা শাড়ি কেনার কথা বললেও তাঁদের কাছ থেকে কোনও শাড়ি উদ্ধার হয়নি ৷ তবে, কিছু জাল বিল পাওয়া গিয়েছে ৷ এঁরা সকলেই প্রভাবশালী ৷ ২০২১ সাল থেকে এই ধরনের অভিযোগ উঠছে ৷ রাজনৈতিক দল বদলের জন্য এই টাকা ব্যাবহার করা হতে পারে বলে পুলিশের অনুমান ৷” দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি মন্তব্য করেন, “এটা ঠিক যে অভিযুক্তদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে ৷ তবে, অভিযুক্তরা ইতিমধ্যেই তদন্তে যোগ দিয়েছেন ৷ দলবদল সংক্রান্ত কোনও বিষয় এখনও পর্যন্ত তদন্তে উঠে আসেনি ৷ তাছাড়া, এই তদন্তে অন্যান্য রাজ্যেরও সহযোগিতা প্রয়োজন ৷ আদালত আপাতত বিধায়কদের জামিন মঞ্জুর করছে ৷ তবে তাঁরা কলকাতা ছাড়তে পারবেন না ৷”