খেলা

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫ উইকেটে হার ভারতের

ভারতকে ৫ উইকেটে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২ বল বাকি থাকতেই জয় ছিনিয়ে নেয় প্রোটিয়ারা। প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১৩৩ রান তোলে ভারত। শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায়। ১৯.৪ ওভারে জয়সূচক রানে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ম্যাচের শেষে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করে নিল প্রোটিয়ারা। সমসংখ্যক ম্যাচে চার পয়েন্টে একধাপ নীচে নেমে গেল ভারত। বৃথা সূর্যকুমারের লড়াকু ইনিংস। দুরন্ত ৬৮ রান টিম ইন্ডিয়াকে বাঁচাতে পারল না। শুরুতে অর্শদীপ‌ আশা জাগালেও, বাজে ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিতে হল। এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধ লুঙ্গি এনগিডির, দ্বিতীয়ার্ধ ডেভিড মিলারের। শুরুতে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ধস নামান দক্ষিণ আফ্রিকার জোরে বোলার। ৪ উইকেট শিকার তাঁর।ব্যাট করতে নেমে জয় নিশ্চিত করেন কিলার মিলার। মার্করাম-মিলারের পার্টনারশিপ ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। পাশাপাশি দল বাছাই নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। দীপক হুডাকে দিয়ে বল না করালে কেন খেলানো হল বোঝা গেল না। ১৮তম ওভারে অশ্বিনকে দিয়ে বল করানোও ফাটকা। প্রথম দুই বলেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়।  এদিন টসে জিতে ব্যাটিং নেন রোহিত শর্মা। শুরুতেই বিপর্যয়। পার্থের উইকেট চিরকাল গতি এবং বাউন্সের জন্য পরিচিত। আর এই দুটোতেই দুর্বল ভারতীয় ব্যাটাররা।‌ গুরুত্বপূর্ণ টসে জিতে কেন রোহিত ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন বোধগম্য হয়নি। বরং দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে উইকেট বুঝে নিতে পারতেন। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে টিম ইন্ডিয়া। পার্থের বাউন্সে ধরাশায়ী ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ। টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থ কেএল রাহুল (৯)। এদিনও পাওয়ার প্লের গণ্ডি পার করতে পারলেন না ভারতীয় ওপেনার। আগের দিন অর্ধশতরান পাওয়া রোহিতও মাত্র ১৫ রানে ফেরেন। নিজের প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে ভারতীয় শিবিরে প্রথম ধাক্কা দেন লুঙ্গি এনগিডি। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় এবং পাঁচ নম্বর বলে ফিরিয়ে দেন রোহিত এবং রাহুলকে। পাওয়ার প্লের শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ভারতের রান ছিল ৩৩। উইকেটের দুই প্রান্তে একটানা এনগিডি, রাবাডা, পার্নেলদের আগুনে গতি সামলাতে হিমসিম খায় ভারতীয় ব্যাটাররা।‌ বিশ্বকাপে দুরন্ত ছন্দে থাকা বিরাট কোহলিও ব্যর্থ। পাকিস্তান এবং নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্ধশতরান পেলেও এদিন মাত্র ১২ রানে আউট হন। দুটো চোখ ধাঁধানো চার মেরে ইনিংসের শুরুটা করেন। কিন্তু এনগিডির বাউন্সার পুল করতে গিয়ে বাউন্ডারিতে‌ রাবাডার হাতে ধরা পড়েন।এদিন একটি পরিবর্তন হয়েছিল দলে। অক্ষর প্যাটেলের জায়গায় একজন বাড়তি ব্যাটার হুডাকে খেলানো হয়। কিন্তু লাভ হয়নি। শূন্য রানে আউট হন। একদিকে একনাগাড়ে উইকেট পড়া সত্ত্বেও বড় শট খেলতে গিয়ে নিজের উইকেট ছুঁড়ে দেন হার্দিক পাণ্ডিয়া (২)।‌ মাত্র ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারায় ভারত। কার্যত ২৬ রানে ৫ উইকেট। একশোর গণ্ডি পেরতে পারবে তো? এই প্রশ্ন যখন মনে জাগছে, তখনই আরও একটি দুর্ধর্ষ ইনিংস উপহার  দেন সূর্যকুমার যাদব। শুধু একা কুম্ভ রক্ষা করলেনই না, দলের বিপর্যয়ের সময় অসম্ভব পরিকল্পিত ইনিংস খেলেন সূর্য। তিনি যে জীবনের সেরা ফর্মে আছেন, সেটা আরও একবার প্রমাণ করেন। একদিকে ক্রমাগত উইকেট পড়া সত্ত্বেও নিজের আগ্রাসী মনোভাবে কোনও বদল আনেননি সূর্য। এই পরিস্থিতিতেও উইকেটের চারিদিকে শট খেলেন মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি। মাত্র ৩০ বলে ৫০ রানে পৌঁছন। কার্তিকের সঙ্গে জুটি বেঁধে ষষ্ঠ উইকেটে ৫২ রান যোগ করেন সূর্য। তারমধ্যে সিংহভাগ রানই তাঁর। মাত্র ৬ রান করে আউট হন ডিকে। মাত্র তিনজন দুই অক্ষরের রানে পৌঁছন। এনগিডি, পার্নেলের গতিশীল বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ভারতীয়রা। একমাত্র সূর্যের তেজে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছয় ভারত। ২০ ওভারের শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রানে শেষ করে টিম ইন্ডিয়া। ৪০ বলে ৬৮ রানে আউট হন সূর্য। ইনিংসে রয়েছে ৩টি ছক্কা এবং ৬টি চার। ৪ উইকেট নেন এনগিডি, ৩ উইকেট শিকার পার্নেলের।