চুঁচুড়া থেকে নিখোঁজ হওয়া ছ’মাসের শিশুর খোঁজ করতে গিয়ে পাচারকাণ্ডের হদিশ পেল চুঁচুড়া থানার পুলিশ। ওই ঘটনায় শুক্রবার চার মহিলা সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, চুঁচুড়া থেকে চন্দননগর পর্যন্ত শিশু পাচারের কাজে অভিযুক্তরা ছড়িয়ে ছিল। এই পাচারের ঘটনায় দেড় লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিসের তৎপরতায় কোলের ছেলেকে পেয়ে আদিবাসী গৃহবধূর মুখে হাসি ফুটেছে এদিন। শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করতে পেরে খুশি চুঁচুড়া থানার আইসি অনুপম চক্রবর্তীও। এদিন চন্দননগর কমিশনারেটের ডিসিপি বিদিতরাজ ভুন্দেস বলেন, আমার সহকর্মীরা অসাধ্য সাধন করেছেন। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে জোড়াঘাট এলাকায় একটি জন্মদিনের পার্টি থেকে শিশু নিখোঁজের অভিযোগ করেছিলেন এক আদিবাসী মহিলা। এই ঘটনায় ফের প্রকাশ্যে এসেছে আধুনিক সময়ে পুত্রসন্তান নিয়ে এক পুরুষের উচ্চাকাঙ্খার বিষয়টি। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি কোলের শিশুর জন্য পাচারকারীদের বরাত দিয়েছিল চন্দননগরের এক ব্যক্তি। তার একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। কিন্তু পুত্রের চাহিদা মেটাতেই এক মহিলাকে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করেছিল সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ওই ব্যক্তি। চন্দননগরের বাসিন্দা সেই মহিলা আরও দু’জনকে নিয়ে শিশু খুঁজতে শুরু করে। তাদের চোখ পড়ে চুঁচুড়ার আদিবাসী গৃহবধূর উপরে। তাঁর ছ’ মাসের বাচ্চাকে অপহরণের ছক কষা হয়। সেই পরিকল্পনা মতোই জন্মদিনের পার্টির আয়োজন করা হয়।
তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, ওই আদিবাসী গৃহবধূর একজন পাতানো দিদি আছে। বৃহস্পতিবার সেই দিদিরই জোড়াঘাটের বাড়িতে জন্মদিনের পার্টি ছিল। চন্দননগরের এজেন্টরা ওই পাতানো দিদিকেও নিজেদের দলে টেনেছিল। পার্টিতে ওই আদিবাসী গৃহবধূ ও তাঁর স্বামীকে প্রচুর মদ খাওয়ানো হয়। দু’জনে প্রায় বেঁহুশ হয়ে পড়লে কোলের শিশুকে পাচার করে দেওয়া হয়। রাতেই তা পৌঁছে যায় চন্দননগরের সেই ক্রেতার বাড়িতে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিসের কাছে হাজির হন আদিবাসী গৃহবধূ। তাতেই পাচারের যাবতীয় পরিকল্পনায় জল পড়ে যায়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জন্মদিনের পার্টির অতিথিদের ধারাবাহিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে শিশু পাচারের ছক ধরে ফেলে পুলিস। গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।