চারটি শিলন্যাস, চারটি প্রকল্প-এর উদ্বোধন এবং কয়েকটি মৌ সাক্ষরিত হয়
জ্যোর্তিময় দত্ত, পূর্ব মেদিনীপুরঃ আজ দিঘায় দেশ-বিদেশের শিল্পপতি ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘আপনারা বিনিয়োগ করুন। পূর্ণ সহযোগিতা দেব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ব্যবসায় এক নম্বর গন্তব্যস্থল হয়ে উঠবে বাংলা।’ আজ দিঘায় ‘বেঙ্গল বিজনেস কনক্লেভ ২০১৯’–এর শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে চারটি প্রকল্প-এর উদ্বোধন এবং চারটি শিলন্যাস হয়। এছাড়াও কয়েকটি মউ সাক্ষরিত হয়। এই আন্তর্জাতিক মানের এই বাণিজ্য সম্মেলনে এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাজপুর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের সাইট অফিস উদ্বোধন।পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়ন নিয়ে দুদিনের এই বাণিজ্য সম্মেলনে শুরুতেই এদিন দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা পাড়েন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে। তিনি আরও বলেন, ২০ টি দেশকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের এভাবে সাহায্য করার জন্য। দীঘায় এই অনুষ্ঠান করতে সাহায্য করার জন্য। এম এস এম ই সেক্টর গত সাত আট বছরে বাংলায় ভালো কাজ করেছে। ৩ থেকে ৪ কোটি কর্মসংস্হান হয়েছে। আমরা এবার গ্রামীণ শিল্পকে তুলে ধরার চেষ্টা করব। এতে দুই থেকে তিন লাখ মানুষ উপকৃত হবে। কুড়ি হাজার তাঁতীরা উপকৃত হবে। তিন বছর ধরে তারা রিলিফ মেটেরিয়াল তৈরী করবে। কর্ম তীর্থ থেকেও তারা বিক্রি করতে পারবে। ছোট শিল্পে প্রচুর কর্মসংস্হান হবে। বাংলা দেউচা পাঁচামি কোল ব্লক পেয়েছে। আমরা তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে চাই। স্থানীয়দের সমস্যা নিয়ে কথা হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে আলোচনা করা হচ্ছে। তাজপুর বন্দর একটা বড় এলাকা নিয়ে হবে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। দেউচা পাঁচামীর কাজ যা রাজ্য সরকারের হাতে আছে সেখানে ২৪ মাসে কাজ হলে বিদ্যুৎ সমস্যা মিটবে। ব্যবসা ভয় দেখানো, মানসিক দূষণের কাজ নয়। কাস্টমস ট্যাক্স, সি বি আই ট্যাক্স। ওটা যদিও এজেন্সি। তাও এটা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করে। পরিবার সুখে থাকলে তো বিনিয়োগ করতে সুবিধা হবে। কিছু কিছু শিল্পপতিরা তাদের কথা বলেন। ভয়ের কথা বলেন। ছোট ছোট সমস্যা হয়ত মাঝে মাঝে হয় কিন্তু বাংলায় বড় সমস্যা নেই। কেউ কেউ এসে রোজ আপনার ঘরে ধাক্কা দেবে আর বলবে গেট আউট। ব্যবসা বন্ধ করে চলে যাও এটা হবে না। ব্যবহার আতিথেয়তা মানবিকতা বাংলায় আছে। আমরা বিভেদ করি না। কেউ হিন্দু কেউ মুসলিম কেউ খ্রিস্টান কিন্তু দিনের শেষে আমরা সবাই মানুষ। দেউচা পাঁচামীর দেওয়ানগনজ ও হরিণসিংঘা-তে প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে এলাকা দেখতে যাচ্ছেন মুখ্যসচিব। কয়লা মন্ত্রকের ছাড়পত্র পেল রাজ্য। গত কাল ছাড়পত্র পেয়েছে কাজ শুরু করার জন্য। ২০০-৩০০ মিটার নীচে কয়লা পাওয়া যাবে এখানে। দেওয়ানগনজ ও হরিণসিংঘাতে কাজ শুরু হবে। এখানে পাথরের কোনও বাধা নেই । ৪০ লাখ মেট্রিক টন কয়লা পাওয়া যাবে এখানে। বাকি অংশে পরিবেশ ও পুর্নবাসন কাজ শুরু করবে রাজ্য। অ্যাপারেল হোলসেল হাব হবে নুঙগিতে। ১৬০০০ লোক কাজ করবে। ১১ লাখ স্কোয়্যার ফিট জায়গা। বেল অ্যান্ড ব্রাস মেটাল সেন্টার। স্টীলের বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য। গড়বেতা স্টিল ফ্যাবিকেশন সেন্টার। ঝালদাতে তৈরি হবে কমন প্রোডাকশন সেন্টার। ভেদিয়াতে কাঁথা স্টিচ সেন্টার। নদীয়ার বীরনগরে মাটির কাজের জন্য আলাদা সেন্টার। শুশুনিয়া এলাকায় পাথরের কাজ করার জন্য সেন্টার। বোলপুরে বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজার। আই আই এফ টি সাথে এম এস এম ই মউ সই।শিলিগুড়িতে ছোট শিল্পের জন্য সেন্টার। তিনি এও জানান, প্রত্যেক শনি ও রবিবার এবার থেকে দীঘার সমুদ্রের ধারে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নতুন জায়গার নাম হবে ঢেউসাগর। মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, ২০২০ সালে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় হবে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন।