বাঁকুড়া: আজ বাঁকুড়ার খাতড়ায় প্রশাসনিক জনসভা থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নয়া এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার।’ সোমবারের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নয়া এই প্রকল্পের আওতায় আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে যাবে কাজ। চলবে আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই প্রকল্পের প্রতিদিন বেলা ১২ টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত রাজ্যের ব্লকে ব্লকে প্রশাসনের তরফে ক্যাম্প করা হবে। ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে মানুষ প্রশাসনের কাছে যে অভাব, অসুবিধার কথা তুলে ধরবে, তা সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করতে হবে। মানুষ যা চাইবে, তা তৎক্ষণাত মানুষকে দিতে হবে। যদি সেইসময় প্রশাসনের হাতে সেই সুযোগ না থাকে, তবে তালিকা তৈরি করতে হবে। জনপরিষেবা সংক্রান্ত প্রকল্পগুলির সুযোগ-সুবিধা আরও বেশি করে মানুষকে পাইয়ে দিতে হবে।’ এদিন খাতড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে বেকারত্ব ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তোপ দাগেন, কেন্দ্র বিভিন্ন প্রকল্পের নামে নিয়োগ করছে। তারপর যেই সেই প্রকল্প শেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন ছেলেমেয়েরা কাজ হারাচ্ছে। বেকার হয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র ‘মাছের তেলে মাছ ভাজছে’ বলেও এদিন কটাক্ষ
করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ‘করোনা পরিস্থিতিতে অনেক রাজ্যে বেতন কমিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্র এমপি ল্যাডের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি মাসে একদিন করে বেতনও কাটা হচ্ছে। কিন্তু এরাজ্যে কারও বেতন, পেনশন বন্ধ হয়নি। রাজ্যের স্কিমে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের কারও চাকরি আমরা নষ্ট করিনি। উপরন্তু রাজ্য সরকার চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়িয়েছে। জেনারেল প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৪০ বছর, ওবিসি ৪৩ বছর, তফশিলি জাতি-উপজাতির ক্ষেত্রে ৪৫ বছর করা হয়েছে। আমরা বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়ে দিয়েছি।’পাশাপাশি বেকার তরুণ-তরুণীদের জন্য ‘কর্মই ধর্ম’ নামে নতুন প্রকল্পের কথাও ঘোষণা করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘এই যে দেখেন মাছওয়ালা মাছ বিক্রি করে। একটি সাইকেল নিয়ে যায়। পিছনে একটা ঠাণ্ডা বাক্স থাকে। আমরা ঠিক করেছি সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ২ লক্ষ ছেলেমেয়েকে একটি করে বাইকের ব্যবস্থা করে দেব। সেই বাইকের পেছনে একটি বাক্স থাকবে। ওই বাইকে করে আপনারা শাড়ি বিক্রি করতে পারেন। জামা কাপড় বিক্রি করতে পারেন। আলু পেঁয়াজও বিক্রি করতে পারেন। ২ লক্ষ মানুষকে কাজের সুযোগ মানে ১০ লক্ষ মানুষের অন্নের ব্যবস্থা করা।’ মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই সভাস্থলে বাদ্য বেজে ওঠে।