লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধা বিকাশ ওয়াকারের দেহ ফ্রিজে রেখে ওই ফ্ল্যাটেই একাধিক মহিলার সঙ্গে সহবাস করেছে আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। দিল্লিতে তরুণীর নৃশংস খুনের তদন্তে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে পুলিশের হাতে। আফতাবের নৃশংসতায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। তদন্তে পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, লিভ-ইন সঙ্গী শ্রদ্ধাকে খুন করে দেহের টুকরো ফ্রিজে রাখার পরে একের পর এক মেয়েকে ঘরে নিয়ে আসত আফতাব। এমনকি, বিভিন্ন সময়ে তার ঘরে আসত বন্ধুবান্ধব, খাবার ডেলিভারি দিতে আসা কর্মী এবং কাজের লোকও। তবে কেউই বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি। ফ্রিজে রাখা শ্রদ্ধার দেহাংশ থেকে যাতে দুর্গন্ধ না বের হয় তার জন্য ঘরে সবসময় রুম ফ্রেশনার দিয়ে রাখত আফতাব। এভাবেই নিজের কীর্তিকে লুকিয়ে রাখত সে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, একটি অনলাইন ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে নানা মহিলার সঙ্গে আফতাবের পরিচয় হত। পরিচিতি বাড়িয়ে ওই মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াত সে। তারপর সেই সব মহিলাদের বাড়িতে ডেকে এনে উদ্দাম যৌনতায় লিপ্ত হত আফতাব। এদিকে, পুলিশি জেরায় আফতাব পালটা দাবি করেছে, একই ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করত শ্রদ্ধা। সেও ওই অ্যাপের মাধ্যমে অন্য ছেলেদের সঙ্গে মিশত। শ্রদ্ধাকে খুন করার পর সে যে অন্য মেয়েদের ডেকে ওই একই বাড়িতে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে, তা পুলিশের কাছে নিজেই স্বীকার করেছে আফতাব। শ্রদ্ধাকে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করেছিল আফতাব। তারপর প্রেমিকার দেহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে টুকরো টুকরো কাটে সে। মোট ৩৫টি টুকরো করা হয় শ্রদ্ধার দেহের। খুনের পর ৩০০ লিটারের একটি নতুন ফ্রিজ কিনে এনেছিল আফতাব। শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলিকে প্যাকেটে মুড়ে ঢুকিয়ে দিয়েছিল ফ্রিজে। পচন আটকাতেই ফ্রিজ কিনেছিল সে। প্রতিদিন রাত ২টা বাজলেই ফ্রিজ খুলত আফতাব। প্রেমিকার দেহের টুকরো একটি একটি করে তুলে নিত। তারপর নিকটবর্তী জঙ্গলে গিয়ে টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসত, প্রতিদিন একটি করে। অন্যদিকে, মেয়ের সঙ্গে অনেকদিন ধরে যোগাযোগ করতে না পারায় দিল্লি পুলিশে মিসিং ডায়েরি করেন শ্রদ্ধার বাবা। তারপরেই সেই খুনের ঘটনায় শনিবার আফতাবকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সময়েও নিয়মিত ডেটিং অ্যাপে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ত আফতাব। এই নিয়েই সম্ভবত ঝামেলা লেগে থাকত তাদের মধ্যে। এই ঝামেলা বাড়তে বাড়তেই খুনোখুনি পর্যন্ত পৌঁছোয়।