জেলা

বর্ধমানে সালিশি সভায় না যেতে চাওয়ায় যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় 9 জনের যাবজ্জীবন দিল আদালত

গ্রামবাসীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জেরে সালিশি সভায় আসতে বলা হয়েছিল ভূতনাথ মালিক নামে এক যুবককে। কিন্তু তিনি সালিশি সভায় না যেতে চাওয়ায় তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মারার ঘটনায় 9 জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বর্ধমান জেলা আদালত। সোমবার বর্ধমানের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক দেবশ্রী হালদার এই রায় ঘোষণা করেন। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন অজয় পণ্ডিত, মোহন পণ্ডিত, রাজু পণ্ডিত, কবিতা পণ্ডিত, মিলন বাগ, ছবি বাগ, অলকা বাগ, লক্ষ্মী বাগ ও শান্তি ঘোড়ুইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি 10 হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ৷ ঘটনা 2011 সালের 10 সেপ্টেম্বর বিকেল প্রায় সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটেছিল। করন্দা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ভূতনাথ মালিক (36)। ওই বছর নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ভূতনাথের সঙ্গে গ্রামের কিছু মানুষের ঝামেলা বাধে। এরপর তাঁকে স্থানীয় একটা ক্লাবে সালিশির জন্য ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই সালিশি সভায় ভূতনাথ হাজির হয়নি। ওই দিন বিকেল নাগাদ ভূতনাথ যখন মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন তাঁকে 26 জন মিলে তুলে নিয়ে যায়। মেরে তাঁর হাত, পা ভেঙে দেওয়া হয়। তারপর ওই অবস্থায় তাঁকে কদমগাছের সঙ্গে বেঁধে ফের পেটানো শুরু হয়। সে অসুস্থ হয়ে জল চাইতে থাকে। কিন্তু তাঁকে জল দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন সেখানে গেলে পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, পুলিশ না-যাওয়া পর্যন্ত পরিবারের লোকেরাও সেখানে যেতে পারেননি। ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ভূতনাথ মালিকের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মেমারি থানার পুলিশ। পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ৷ অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করে পুলিশ। চার্জশিটে 26 জনের নাম ছিল। মামলা চলাকালীন দু’জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া দুই নাবালক অভিযুক্ত থাকায় তাদের জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে বিচার চলছে। প্রমাণ না-মেলায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে 13 জনকে ৷