খেলা

মহমেডান মাঠে সাম্বার ঝলক, কাফুর জোড়া গোলে জিতলেন কলকাতার হৃদয়

খেললেন, মন জয় করে নিলেন কাফু।  ৫২ বছর বয়স। ২০ বছর আগে বিশ্বকাপ জিতেছেন। কিন্তু দেখে কে বলবে! টানটান চেহারা, উইথ দ্য বল দৌড়, ডিফেন্স চেড়া ড্রিবল- এক কথায় অনবদ্য। পজিশন রাইট ব্যাক হলেও এদিন একটু ওপরে উঠে খেললেন। বেঙ্গল পিয়ারলেসের জার্সিতে করলেন জোড়া গোল। দীর্ঘ বছর পর আবার ব্রাজিলের হলুদ জার্সি উঠেছিল গায়ে। কাফুর জার্সি নম্বর ২ ছিল বলে এদিন দুই দলের ২২ জন ফুটবলারের জার্সির নম্বরই দুই ছিল। ব্যাকগ্রাউন্ডে জনপ্রিয় ব্যান্ডের গান ‘ব্রাজিল..’ বাজছে। আর মাঠে কাফুর পায়ের শিল্প। বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কাফুকে চোখের সামনে খেলতে দেখার স্বপ্ন সার্থক। দুঙ্গা, বেবেতো যুবভারতীতে খেলে গিয়েছেন। অনেক তারকাই এসেছে কলকাতায়, কিন্তু পুরোদমে মাঠে নেমে খেলতে দেখা যায়নি। কিন্তু শনিবার মহমেডান মাঠে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে পুরো ২০ মিনিট খেললেন‌ কাফু। দুটো অর্ধ ১০ মিনিট করে। কলকাতা পুলিশ ফ্রেন্ডশিপ কাপ উপলক্ষে প্রদর্শনী ম্যাচ ৪-০ গোলে জিতল বেঙ্গল পিয়ারলেস। বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল অধিনায়কের বিপক্ষে কলকাতা পুলিশ দলেও ছিল তারকার সমাহার। ছিলেন লিয়েন্ডার পেজ, মনোজ তিওয়ারি, অ্যালভিটো ডি কুনহা, রহিম নবিরা।‌ মহমেডান মাঠে যেন জনপ্লাবন। কাফুকে ছোঁয়ার জন্য, সেলফি তোলার জন্য, অটোগ্রাফ নেওয়ার ভিড় সামলাতে হিমসিম খায় পুলিশ। যার ফলে নির্ধারিত সময় শুরু করা যায়নি ম্যাচ। খেলা চলাকালীনও একবার গ্যালারি থেকে দর্শক নেমে এসে মাঠে ঢুকে পড়ে। ম্যাচের আগে মহমেডান মাঠে রাজকীয় অভ্যর্থনা হয় ব্রাজিলীয় তারকার। ঘোড় সওয়ার পুলিশের পরপরই হুড খোলা গাড়িতে মাঠে প্রবেশ করেন সস্ত্রীক কাফু। বিশ্বকাপারকে ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে। ভিড় ঠেলে কোনওক্রমে মঞ্চে তোলা হয় কিংবদন্তিকে। উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মনোজ তিওয়ারি, পুলিশ কমিশনার বিনীত কুমার গোয়েল, দময়ন্তী সেন, অ্যালভিটো, নবি। পরে যোগ দেন লিয়েন্ডার পেজ। অসংখ্য ভক্তের মধ্যে সামিল হতে পেরে খুশি বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়কও। কাফু বলেন, ‘আমাকে এত ভালবাসা দেওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। এদিন অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘ঐতিহাসিক ম্যাচের ঐতিহাসিক নায়ক কাফু। ওর সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিতে পারব ভাবিনি। স্বপ্ন সার্থক।’ মহমেডান মাঠে কলকাতার হৃদয় জয় করে কিছুক্ষণের জন্য ইডেনে যান সস্ত্রীক কাফু। দেখা করেন বর্তমান সভাপতি স্নেহাশিস গাঙ্গুলি এবং প্রাক্তন সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে। ব্রাজিলীয় তারকাকে টাই উপহার দেওয়া হয় সিএবির পক্ষ থেকে। মুস্তাক আলির ফাইনাল চলছিল ইডেনে। ক্লাব হাউসের লোয়ার টায়ারে দাঁড়িয়ে বিশ্বকাপ হাতে ছবি তোলেন কাফু। ছবি তোলেন সৌরভ গাঙ্গুলির ছবির সামনেও। শনিবারের কলকাতা কাফুময়।