হক জাফর ইমাম, মালদাঃ ৪০০ বছরের পুরানো মা মুক্তকেশী পুজো শুরু হলো মালদা বাঙ্গিটোলা গ্রামে।কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের ভাঙ্গন এলাকার সবচেয়ে প্রাচীন ও ও জাগ্রত মুক্তকেশী পুজো শুরু হলো বাঙ্গিটোলা গ্রামে। ৫ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল পাঁচ দিনব্যাপী বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মহাযজ্ঞ অন্নকূট ও দুস্থদের বস্ত্র বিতরণ এর মাধ্যমে এই পুজো চলে ।আনুমানিক ৪০০ বছর পুরাতন এই পৃজা ঘিরে স্থানীয় মানুষের শ্রদ্ধা ভক্তি দিন দিন বেড়ে চলেছে ।প্রতি বছর চৈত্র মাসে শনিবারে পূজা হয়। পূজার দিন স্থানীয় ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা যায় মন্দির প্রাঙ্গণে । কর্মসূত্রে গ্রামের বাইরে থাকা প্রত্যেক মানুষ শত অসুবিধা থাকা সত্বেও গ্রামে উপস্থিত থাকে।পূজা সৃষ্টির ইতিহাস নিয়ে গ্রামবাসীদের প্রচলিত ধারণা আজ থেকে ৪০০ বছর আগে এই গ্রামের এক যোগী পুরুষ রামদেব বিদ্যানিধি চক্রবর্তীকে তন্ত্র সাধনা করেছিল এক বৃদ্ধা রমণী। সেই বৃদ্ধার অনুপ্রেরণায় ঘন জঙ্গলে বিরাট বটবৃক্ষের পাদদেশে পঞ্চমুন্ডির আসন পঞ্চ তন্ত্র সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। তিনি সিদ্ধি লাভের পর যোগী বিদ্যানিধি চক্রবর্তী মা মুক্তকেশী সাক্ষাৎ দর্শন লাভ করেন । বলা বাহুল্য বিদ্যানিধির পূর্বদৃষ্ট সেই বৃদ্ধা ছিলেন সর্ব কল্যাণময়ী মা মুক্তকেশী পরম ও জাগ্রত ।এই মুক্তকেশী কে স্থানীয় মানুষ গ্রাম ও কল্যাণী রূপে অর্চনা করেন । স্থানীয় মানুষের দাবি এলাকার বিভিন্ন মহামারী ও বিপদ থেকে রক্ষা করেন এই গ্রাম ও কল্যাণ এই গ্রামের প্রতিটি মানুষ গঙ্গার ভাঙনের হাত থেকে একমাত্র মা মুক্তকেশী গ্রাম কে রক্ষা করেছে। শনিবার এখানে পূজাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সারারাত সর্বধর্ম মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় । এবছর সারারাত ধরে মায়ের পুজো করেন করবেন স্থানীয় দুই পুরোহিত জয়ন্ত চক্রবর্তী ও জয়ন্ত মিশ্র । এছাড়াও কলকাতা থেকে আগত শিল্পীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। এবছর ২০১৪ এবং ২০১৭ সারেগামাপা খ্যাত শিল্পী সায়ন পাল , প্রসূন ব্যানার্জি ,ইন্দ্রানী ব্যানার্জির বিভিন্ন ধরনের গান এবছর এলাকা মাতাবে । এছাড়াও থাকছে কীর্তন গম্ভীরা বাউল গান। সোমবার অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার দরিদ্র নারায়ন সেবা। হাজার হাজার কোটি মানুষকে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হবে। এছাড়াও বুধবার মহা ধুমধাম করে হবে প্রতিমা নিরঞ্জন । ঐদিন গোটা গ্রাম প্রতিমা নিরঞ্জনের পর একসাথে খাওয়া দাওয়া করে পূজা কমিটির সম্পাদক অনুরাগ কুমার জানান 400 বছরের ঐতিহ্য শালী ও পুরাতন এই পূজা ভাঙ্গন এলাকার সবচেয়ে বড় পুজো ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে এই মুক্তকেশী মন্দির তৈরি হয়েছে। এই মন্দির দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন বহু মানুষের সমাগম হয় । ৫ থেকে ১০ এপ্রিল এলাকার বিভিন্ন ধর্মের মানুষের উন্মাদনায় মেতে ওঠে এই মুক্তকেশী প্রাঙ্গণ ।