সম্পাদকীয়

বঙ্গ ভোটের রঙ্গ মেলায় তটস্থ নন্দীগ্রাম

নিবেদিতা শেঠঃ ১৪ বছর আগে নন্দীগ্রামে গণহত্যার মর্মান্তিক স্মৃতিতে কারা যেন আঁচর কাটছে। ভোটের আগে শেষ প্রচার ছিল নন্দীগ্রামে। হেভিওয়েটদের প্রচারে আজ সেখানে জনজোয়ার নজরে এলে বটে। সে নন্দীগ্রাম আজ যেন বঙ্গ ভোটের রাজধানী। দিনটা ছিল ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ।বামেদের রাজত্ব বাংলায়। চার হাজারের বেশি সশস্ত্র পুলিশ অপারেশন চালায় নন্দীগ্রামে। এই অভিযানের খবর পেয়ে ২০০০ গ্রামবাসী ও এলাকায় অধ্যুসিত মাওবাদীদের নিয়ে একটি পাল্টা প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তোলা হয়, যে বাহিনীর পুরোভাগে ছিলেন মহিলা ও শিশুরা। পুলিশ-স্থানীয় সশস্ত্র মাওবাদীদের সংঘাতে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন গ্রামবাসী ও মাওবাদী নিহত হন। রক্তের বন্যা বয়েছিল সে নন্দীগ্রামে। আজ সে স্মৃতিতে কারা যেন ওস্কানি দিচ্ছে, তটস্থ নন্দীগ্রাম।এবারের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম যেন ভোটের এপিসেণ্টার। একদিকে মাটি আঁকড়ে ভোট হওয়া পর্যন্ত নন্দীগ্রামেই থাকছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে জায়গা তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দিয়েছিল, সে জায়গা থেকেই লড়ছেন এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে বিজেপির নজরও যে এবার নন্দীগ্রামেই তা বলা বাহুল্য। এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ অধিকারী পরিবারের ছেলে শুভেন্দু। আজ তাঁর সমর্থনেই নন্দীগ্রামে খোদ অমিত শাহ মেগা রোড শো করলেন । প্রচারে ঝড় তুলতে ময়দানে নামলেন বিজেপির তুরুপের তাস মিঠুন চক্রবর্তীও। আবার সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত নন্দীগ্রামের সিপিআইএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে আজ প্রচারে নামেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। প্রস্তুতি শেষ। এবার পরীক্ষার পালা। প্রশ্ন একটাই নন্দীগ্রাম তুমি কার? নিজেদের হাইলাইট করতে রাজনৈতিক দলগুলো অনেক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করেছে। বিগত কয়েক দিনে অনেক রঙ্গ হল।তাবড় তাবড় নেতা-নেত্রীদের ভাষণের বন্যা বয়ে গিয়েছে। কিন্তু সর্বোপরি নন্দীগ্রামের মানুষ কী বলছে? সবুজ না গেরুয়া নাকি লালের শেড। রঙ বুঝি না, প্রাণ বুঝি। তোমাদের লড়াইয়ে আমাদের প্রাণকে বাজি রেখো না যেন। গুলির আওয়াজ আর নয়। হত্যালীলা যেন আর না সইতে হয়। দোহাই তোমাদের! বলছে নন্দীগ্রাম।।