গত তিন-চার দিন ধরে পুকুরে ভাসছিল মুখ বাঁধা কয়েকটি বস্তা। মাছের খাবার ভেবে প্রথমে তেমন কেউ গুরুত্ব দেননি।রবিবার সকাল থেকে সেই বস্তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে দেখে টনক নড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। খবর দেওয়া হয় বারাসত থানায়। খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ এসে বস্তা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ তাঁদের। লক্ষ্য করেন, বস্তার ভিতর রয়েছে মানব দেহের টুকরো টুকরো অংশ। পরে, সেগুলো উদ্ধার করে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। হদয়পুর স্টেশনের অদূরে এক নম্বর বেঙ্গল কেমিক্যাল চত্বরের একটি পুকুরে তিন-চার দিন ধরে কয়েকটি বস্তা ভাসছিল। এলাকাটি বারাসত পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। বস্তাগুলোয় আবর্জনা আছে ভেবে স্থানীয়রা প্রথমে গুরুত্ব দেননি। এদিন সকাল থেকেই দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়ে এলাকার লোকজনের। পুকুরে ভেসে থাকা বস্তাগুলো থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হতে দেখে শেষমেশ বাসিন্দারা খবর দেন বারাসত থানায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। ডুবুরি নামিয়ে বস্তাগুলো টেনে এনে পাড়ে তোলা হয়। তারপর বস্তার বাঁধন খুলতেই বাইরে বেরিয়ে আসে মানুষের শরীরের টুকরো টুকরো অংশ। তিনটি বস্তাতে আলাদা আলাদা ভাবে ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই বিষয়ে শুক্লা অধিকারী নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “পুকুরের পাশেই আমার বাড়ি। স্বভাবতই বস্তাগুলোকে দেখে প্রথমে ভেবেছিলাম বাড়ির কোনও নোংরা, আবর্জনা ফেলা হয়েছে। আজ জানলাম ভিতরে মানুষের বিভিন্ন দেহাংশ রয়েছে।” একই সুর শোনা গিয়েছে বিশ্বনাথ চক্রবর্তী নামে অপর এক বাসিন্দার গলাতেও। তাঁর কথায়, “সম্ভবত রাতের অন্ধকারে কেউ বস্তাগুলো পুকুরে ফেলে দিয়ে গিয়েছে। তবে, কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা বলতে পারব না। আমরা চাই, যে-ই করে থাকুক, তাকে যেন খুঁজে বের করা হয়।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অন্য কোথাও খুন করে দেহাংশগুলিকে বস্তায় ভরে কেউ বা কারা রাতের অন্ধকারে পুকুরে ফেলে দিয়ে গিয়েছে। ওই পুকুরে আরও দেহাংশ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা।