সম্পাদকীয়

চলছে জমজমাট প্রচার, থোরাই কেয়ার ভয়াল করোনাকেও!

নিবেদিতা শেঠ

…….এই চিহ্নে ভোট দিন। বাংলায় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতির ময়দান এখন সরগরম। রমরমিয়ে প্রচার চলছে। কার সভায় কত বেশি ভিড় হয়, কার রোড শো কত লোককে টানতে পারে! একেবারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। আর বাক্যবাণে আক্রমণের কথা আর তুলছি না। শীতলকুচিতে মানুষের মৃত্যু নিয়ে যেসব মন্তব্য জনপ্রতিনিধিদের মুখ থেকে শোনা গিয়েছে, ধিক্কার জানাই! অতি নিকৃষ্ট ও নিন্দনীয়। আর এই সমস্ত কিছুর ভিড়ে আজ হারিয়ে গেছে অতিমারী করোনারি আবহে নূন্যতম বিধিনিষেধটুকু। মাস্ক নেই মুখে মানুষের, পকেটে ওই নাম কা বাস্তে স্যানিটাইজার। কারোর হেলদোল নেই। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যে আরও মারাত্নক, তবু ভ্রূক্ষেপ নেই। প্রচারে নানান বার্তা চলছে। কিন্তু করোনা রুখতে সেই সচেতনতা বার্তা কই? নাকি মানুষকে সচেতন করলে যদি প্রচারের সভা, রোড শো তে লোক কম পড়ে যাবে ? দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলো যেখানে আবার লকডাউন, জনতা কারফিউ-এর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেখানে বাংলা শুধু ভোটের প্রচারে ভিড় বাড়াতে ব্যস্ত। লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে প্রতি ২৪ ঘণ্টায়, মৃত্যুও বাড়ছে ক্রমশ। তবু কেউ বলছে না, প্রচার বন্ধ হোক, জমায়েত বন্ধ হোক। যদিও কলকাতা হাইকোর্ট প্রচারে লাগাম টানতে জেলাশাসকদের ও সিইও-কে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সেভাবে শক্ত হাতে করোনা রুখতে কোথায় ব্যবস্থা? রাজ্যে বাড়বাড়ন্ত সংক্রমণ। হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়াল করোনা। তবু বাস, ট্রাম, রাস্তাঘাট, দোকান, বাজার কোথাও আমজনতাকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। থোরাই কেয়ার। সাবধান করলেও, কেউ বলছে বডি এতদিনে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, কেউ বা বলছে যা হবার হবে, ওত ভয় করে কি হবে। মরলে মরব। আবার কারোর দাবি, ভ্যাকসিন নিয়েছি তো। আর চান্স নেই। এঁদের সকলের উদ্দেশে একটাই অনুরোধ, বেপরোয়া অথবা দুঃসাহসিক মনোভাব নিয়ে অতিমারী করোনাকে সামলানো যাবে না কিন্তু! চিকিৎসকরাও আতঙ্কিত এই মর্মে। দোহাই সকলকে, আবার সচেতন হোক রাজ্যবাসী। আগে করোনার হাত থেকে রক্ষা হোক, তারপর না হয় কুর্শির লড়াই।

প্রতীকী ছবি।