জেলা

তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়ি ও অফিসে আয়কর হানা, উদ্ধার ১৫ কোটি টাকা

জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়ি ও অফিসে আয়কর হানা। ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে তল্লাশি। জঙ্গিপুরের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনের বাড়ি ও বিভিন্ন কারখানা, অফিস থেকে ১৫ কোটি টাকা উদ্ধার। জানা গিয়েছে, এদিন সকালে মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের আনন্দ বিড়ি ফ্যাক্টরি, বিজলি বিড়ি ফ্যাক্টরী এবং সুতিতে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক জাকির হোসেনের শিব বিড়ি ফ্যাক্টরী সহ বেশ কয়েকটি বিড়ি ফ্যাক্টরিতে হানা দেয় ইনকাম ট্যাক্টস ডিপার্টমেন্টে। বুধবার বেলা ১১ টা নাগাদ সামসেরগঞ্জের গোবিন্দপুরের আনন্দ ফ্যাক্টরি , ধূলিয়ানের বিজলি বিড়ি কারখানা এবং সুতিতে প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনের বাড়ি তথা শিব বিড়ি কারখানাতে হানা দেয় আয়কর দফতরের বিশাল প্রতিনিধি দল। সূত্রের খবর, নগদ ১১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এই অর্থের মধ্যে শুধুমাত্র ৯ কোটি টাকা প্রাক্তন মন্ত্রীর মুর্শিদাবাদের অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে। আয়কর দফতর সূত্রে খবর, দেশের মোট ২৮ জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৫ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে আয়কর দফতর।  অন্যদিকে, আয়কর হানায় বাড়ি-অফিসে নগদ উদ্ধার-কাণ্ডে অবশেষে মুখ খুললেন প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন। পাশাপাশি এই ঘটনায় চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন শ্রমমন্ত্রী জাকির হোসেন। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, ‘আমার বাড়ি থেকে যৎসামান্য টাকা উদ্ধার হয়েছে। সেই টাকা শ্রমিকদের বেতনের জন্য রাখা ছিল। কিছু টাকা আমার ছেলে আর স্ত্রী-মেয়ের। চালকল থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে, সেটাও ধান-গম কেনার টাকা, বেতনের টাকা। নগদে না দিলে ধান-গম কৃষকরা দেবেন না। তাছাড়া চালকল শরিকি ব্যবসা, অন্যদের জিজ্ঞাসা করতে হবে টাকার উৎস। ‘ এরকম করলে মিল বন্ধ হয়ে যাবে, এই আশঙ্কা করেন তৃণমূল বিধায়ক। উল্লেখ্য, প্রাণে মারার চেষ্টা করা হয়েছে একাধিকবার। কপালের জোরে গুরুতর জখম হয়েও বেঁচে গিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ছিল না গরু পাচার বা কয়ালা পাচারের অভিযোগও। তাই তাঁকে নিয়ে টানাটানি করতে দেখা যায়নি সিবিআই বা ইডিকে। কিন্তু তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা(IT Raid) কিনা উদ্ধার করল নগদ ১৫ কোটি টাকা যার কোনও হিসাব নেই। আয়কর দফতরের পরিভাষায় যাকে বলে কিনা ‘Unaccounted Property’। তিনি একজন শিল্পপতি। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী(। বর্তমানে বিধায়ক ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অতন্ত আস্থাভাজন।  মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমার সুতিতে বাড়ি জাকির হোসেনের। দশম শ্রেনী পাশ এই ব্যবসায়ী নিজেকে শিল্পপতি হিসাবে তুলে ধরেছেন গত কয়েক দশমের মধ্যেই। মূলত বিড়ি শিল্পের ওপর ভর দিয়েই তাঁর উড়ান। তারপর একে একে গড়ে তুলেছেন জুটমিল, কাপড়ের ব্যবসা, গাড়ির ব্যবসা। সেই জাকিরই এখন জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে নেই কোনও অপ্রীতিকর অভিযোগ। কার্যত গোতা জঙ্গিপুর মহকুমাজুড়েই তাঁর প্রভাব। তাঁর দাপটে এলাকায় কোনঠাসা হয়ে গিয়েছে গরু পাচার চক্র সহ একাধিক অসামাজিক কাজকর্ম। তার জেরেই তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হয় ২০২১ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের সময়। যদিও তাতেও তাঁর জয়যাত্রা ঠেকানো যায়নি। এহেন জাকিরের বাড়িতেই কিনা আয়কর দফতরের হানাদারি।