কলকাতা

কালীপুজোর বিসর্জনে শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু কলকাতা পুলিশের কনস্টেবলের

কালীপুজোর বিসর্জনে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বিসর্জনের সময় এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হল কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলের। জানা গিয়েছে, বাচ্চাটিকে বাঁচাতে যাওয়া পুলিশ কর্মীকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে কাঠামো সরানোর কাজ করা একটি এক্সকাভেটর অর্থাৎ জেসিবি গাড়ি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত পুলিশ কর্মীর নাম সন্দীপ বর্মন। বয়স ৩৪। জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেল থেকেই কালীপুজোর বিসর্জন চলছিল নিমতলা ঘাটে। শহরের অন্যান্য ঘাটের মতো নিমতলাতেও মোতায়েন ছিল পুলিশের অতিরিক্ত বাহিনী। জলে প্রতিমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দূষণ এড়াতে কাঠামো তুলে নেওয়ার জন্য পুরসaভার তরফে ক্রেন, জেসিবি-এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। দুর্ঘটনা ঘটে শেষ রাতে। রাত আড়াইটে নাগাদ শেষ হয়ে যায় বিসর্জন। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষায় থাকার পরও কোনও প্রতিমা আর না আসায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীরা চলে যান। কিন্তু প্রায় রাত সাড়ে তিনটের পর ঘাটে এসে উপস্থিত হয় বিশাল একটি প্রতিমা। বর্তমানে নির্দিষ্ট দূরত্বের পর প্রতিমার সঙ্গে আর কাউকে যেতে দেওয়া হয় না ঘাটের কাছে। পুরসভা কর্মীদের সাহায্যে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। সঙ্গে থাকে বাছাই করা কয়েকজন কমিটি সদস্য। কোনও ছোট বাচ্চা বা শিশুকে ঘাটের কাছে যেতে অনুমতি দেওয়া হয় না। কিন্তু ভোররাতে বিসর্জনের জন্য আসা ওই প্রতিমার সঙ্গে প্রচুর লোক ঘাটের দিকে এগিয়ে যান। সঙ্গে ছিল বেশ কয়েকজন শিশু ও বয়স্ক লোকও। ইতিমধ্যে প্রতিমা আসার খবর ঘাটের সংলগ্ন দায়িত্বে থাকা পুলিশের রিজ়ার্ভ ফোর্সের কাছে যায়। সেই খবর পেয়েই ঘাটে এসেছিলেন কনস্টেবল সন্দীপে বর্মন। প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, ঘাটে পৌঁছে পুলিশ কনস্টেবল দেখেন কালী প্রতিমাকে জলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কিন্তু সকলের অলক্ষ্যে পিছনে এক শিশুও জলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা দেখেও সব ভুলে ছুট লাগান ওই কনস্টেবল। বাচ্চাটির কাছে পৌঁছে যান তিনি কিন্তু সেসময় তাঁকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি জেসিবি গাড়ি। পুরসভার ওই গাড়িটি প্রতিমার কাঠামো সরানোর কাজ করছিল। ধাক্কায় আহত কনস্টেবলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মৃত পুলিশ কর্মীর বাড়ি জলপাইগুড়িতে।