কলকাতা

হেস্টিংসে বিজেপির যুব মোর্চার সহ সভাপতি রাজু সরকারের মৃত্যু কান্ডে তদন্তে লালবাজার

কিভাবে মৃত্যু হল বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি রাজু সরকারের, জানতে তদন্ত শুরু করলেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা ৷ রাজু সরকারের মৃত্যু নিয়ে একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা ৷ ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিজেপি কার্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইমের আধিকারিকরা ৷ পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে ৷ যদিও ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সঙ্গে কথা বলেছে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগ । তাঁদের নামও নথিভুক্ত করা হয়েছে । প্রয়োজনে তাঁদের লালবাজারে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, বিজেপির রাজ্য সদর দফতর হেস্টিংসে সাংগঠনিক বৈঠক হয় সোমবার ৷ সেই সাংগঠনিক বৈঠকে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন কয়েকজন বিজেপি কর্মী । দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়৷ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় ৷ ঘটনায় বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি রাজু সরকারের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় । বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ দক্ষিণ কলকাতার ঘরছাড়া যুবমোর্চার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক ছিল । সেই বৈঠকে যুব মোর্চার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয় ৷ উত্তেজনা তৈরি হয় । বৈঠক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন যুবনেতা রাজু সরকার । বৈঠক শেষে রাজু সরকারের গোষ্ঠীর সঙ্গে কয়েকটি বিষয় নিয়ে যুবমোর্চার আরেক গোষ্ঠীর তীব্র বাদানুবাদ হয় । এই ঘটনার পর রাজু সরকার অসুস্থ বোধ করেন । এরপর তাঁকে প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতাল ও পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাজু সরকারকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । এই বিষয় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমি দিল্লিতে আছি । কী হয়েছে, সেটা জানি না । তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে ৷’’ এ বিষয়ে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে, অশান্তির অভিযোগ সঠিক নয়। অশান্তির ঘটনাই ঘটেনি।’ এই প্রেক্ষাপটে হেস্টিংসের পার্টি অফিসে ঠিক কী ঘটেছিল, তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে তৃণমূল। রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষ নতুন ঘটনা নয় ৷ এর আগেও বহুবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৷ সোমবার আবারও সেরকমই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল ৷ নির্বাচনের আগে থেকেই গোষ্ঠী বিবাদ শুরু হয়েছে রাজ্য বিজেপিতে ৷ ভোট মিটলেও কিছুতেই থামতেই চাইছে রাজ্য বিজেপির আভ্যন্তরীণ বিবাদ ৷ ইতিমধ্যই বিজেপি যুবনেতার মৃত্যুতে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করল কলকাতা পুলিশ। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই দায়ের করেছে মামলাটি। শুধু তা-ই নয়, লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার তরফে তদন্তও শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই বিজেপির হেস্টিংস অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। কীভাবে হাতহাতির ঘটনার সূত্রপাত, সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে মৃত নেতার পরিবারের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। বিজেপি-র সর্বোচ্চ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে কী ভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটল প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।