ব্যারাকপুরের মহিলা চিকিৎসকের রহস্য মৃত্যুতে গ্রেফতার তাঁর লিভইন পার্টনার। মৃতা প্রজ্ঞাদীপা হালদারের পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার ভারতীয় সেনার চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারী। পদমর্যাদায় তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল। প্রজ্ঞাদীপার মা ঝরনা হালদারের অভিযোগ, আত্মহত্যা নয়, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। লিভ-ইন পার্টনারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ। এছাড়া পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তে প্রজ্ঞাদীপার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। যা খুব একটা পুরনো নয়। রিপোর্ট মৃত্যুর কিছু আগেই আঘাতগুলি পেয়েছিলেন মৃতা। তাঁর দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া কাগজেও এই অবস্থার জন্য ‘কৌশিক দায়ী’ বলে উল্লেখ করা ছিল। গত সোমবার ব্যারাকপুর সেনা ছাউনির অফিসার্স কোয়ার্টার্স ‘ম্যান্ডেলা হাউস’-এর ২০ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় জাগুলিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ও লেখিকা প্রজ্ঞাদীপার নিথর দেহ। তাঁর পাশেই মিলে তিন ছত্রে লেখা একটি নোট। জানা গিয়েছে, ২০২০ সাল থেকে ওই ফ্ল্যাটেই তাঁর সঙ্গী কৌশিক সর্বাধিকারীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন কৌশিক। তাঁকে এদিন ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রজ্ঞাদীপার মৃত্যুর পরেই সেনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পুলিশের অনুমান, গ্রেফতারির ভয়েই অসুস্থতার ভান করেছিলেন তিনি। প্রজ্ঞাদীপা হালদারের মৃত্যুতে একাধিক ধন্দ তৈরি হয়েছে। তাঁর মৃতদেহের অবস্থান ও দেহের আঘাত নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। প্রজ্ঞাদীপার দেহ গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় বিছানায় হাঁটু মুড়ে পড়েছিল বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গোটা ঘর ছিল অগোছালো। বিছানার পাশে ছিল মদের বোতল ও কাচের গ্লাস, ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র ছড়ানো ছিল মেঝেয়। ঘটনার আগেই ওই ঘরে হাতাহাতি হয়েছিল কিনা সন্দেহ। প্রজ্ঞাদীপার পরিচিতদের অনেকের অভিযোগ, তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করতেন কৌশিক। এমনকী তরুণীর মা-ও সেই ঘটনা জানিয়েছেন অভিযোগে। মৃতা প্রজ্ঞাদীপা হালদারের লিভ-ইন পার্টনার কৌশিক সর্বাধিকারীকে গ্রেফতার করে ব্যারাকপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।