জেলা

এনআরসি করতে দেব না, ভোটার লিস্টে নাম তুলুন, মালদার প্রশাসনিক বৈঠক বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

মালদা জেলার বুকে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন বার্তা দেন সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন সকলে। বৈঠকের শুরুতেই তিনি বলেন, ‘মুর্শিদাবাদ-মালদহ-কোচবিহারের অনেক মানুষ বাইরে যান কাজ করতে। দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে তাঁদের দেহ আনে রাজ্যই।’ তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী আজ ‘কর্মসাথী:পরিযায়ী শ্রমিক’ পোর্টালের কথা বলেন। সেখানে কে কোথায় কাজ করতে যাচ্ছেন, সবকিছু তথ্য দিয়ে রাখবেন তাঁরা। ‘আপন বাংলা’ বলে অপর একটি পোর্টালের কথাও বলেন। এই পোর্টাল কেন? মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, অনেকই বাইরে পড়াশোনা করে। তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা ভেবে এবং তাঁরা অন্যদের জন্য কিছু করে চাইলে সেসব কথা ভেবেই এই পোর্টাল। ভবিষ্যৎ নামের প্রকল্পের কথাও বলেন তিনি, যেখানে ব্যবসার জন্য লোন দেওয়া হবে, তার জন্য গ্যারেন্টার হতে হবে না ব্যবসায়ীকে। তাঁর কথায় উঠে আসে এনআরসি’র প্রসঙ্গ।  সেই আশা বিফল হল না। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমজনতাকে যেমন মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিলেন তেমনি বার্তা দিলেন পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদেরও। বুধবার রাতেই ট্রেনে করে মালদায় পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে ইংরেজবাজার শহরের দূর্গাকিঙ্কর সদনে প্রশাসনিক সভায় যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। অডিটোরিয়াম থেকে তাঁর সরকারের একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি NRC নিয়ে, কালিয়াগঞ্জ নিয়ে, ভোটার লিস্ট নিয়ে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মালদার প্রশাসনিক সভায় সরকারের শীর্ষ আধিকারিক থেকে শুরু করে জেলা সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এদিন NRC নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘NRC নিয়ে আবার চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র। সরাসরি NRC-র নাম বলা হয়নি। নির্বাচন সামনে এলেই এইসব মনে পড়ে। কিন্তু আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আমরা NRC করব না। NRC করতেও দেব না। চিঠিতে পরিষ্কার লেখা আছে যাঁদের আধার কার্ড, প্যান কার্ড, মাথা-মুণ্ডু কার্ড না থাকবে, তাদেরকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করা হবে। মানে যাতে তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে তাড়িয়ে দেওয়া যায়। ঠিক যেমনটা অসমে হয়েছিল। ওটা নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকুন, আমি দেখে নেব। তবে অতি অবশ্যই Voter List-এ নিজেদের নাম তুলবেন। ১০ বছর পর আধার কার্ড নতুন করে করতে বলছে। সেটা যখন শুরু হবে তবে করে নেবেন। ভোট দেওয়া নাগরিক অধিকার। যাতে বলতে না পারে যে ভোট দেওয়ার কারণে নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরা সব কিছুই করতে পারে। কোনও বিশ্বাস নেই এঁদের ওপর। তাই ভোটার লিস্টে নাম তোলার অনুরোধ করলাম।’