মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব। সোমবার তিনি সরব হলেন প্রশাসনিক ভাবে। তিনি সাফ জানালেন, ‘কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে শাসন চলাচ্ছে সরকার। বিরোধীদের অপদস্থ করা হচ্ছে। সব ব্যাপারে এজেন্সি ব্যবহার করে তুঘলকি কায়দায় সরকার চালাতে চাইছে কেন্দ্র।’ আর তার সমাধান তথা প্রতিবাদ হিসাবে তিনি দাবি জানালেন, ‘আমি চাই, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে স্বায়ত্বশাসন দেওয়া হোক।’ সঙ্গে এটা জানাতে ভোলেননি, ‘কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অটোনমির দাবি আমিই প্রথম তুললাম।’ সোমবার নবান্নে ছিল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেখানে একাধিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই বিষয়েই এদিন বিকালে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি কেন্দ্রের এই ‘এজেন্সিরাজ’ নিয়ে সরব হন।কেন্দ্রীয় এজেন্সি বলতে মমতা যে এদিন সিবিআই এবং ইডি-র মতো সংস্থাকে বুঝিয়েছেন সেটা বুঝতে কারও বাকি নেই। কেননা শুধু মমতা নন, দেশের একাধিক বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল তথা সেই সব দলের নেতানেত্রীরা মোদি জমানায় বার বার সরব হয়েছেন সিবিআই, ইডি বা এনআইএ’র মতো সংস্থাগুলির অপব্যবহার নিয়ে। তাঁদের মূল বক্তব্য কার্যত একই। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি বিরোধী নেতানেত্রী, জনপ্রতিনিধি ও দলগুলির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে কাজে লাগাচ্ছে। এই কাজে লাগানোকেই এদিন মমতা মোদি সরকারের ‘এজেন্সি রুল’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। আর এই ‘এজেন্সি রুল’ থেকে দেশকে বাঁচাতে তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে স্বায়ত্বশাসন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এদিন মমতা বলেন, ‘স্বশাসিত করা হোক এজেন্সিগুলিকে। সিবিআই, ইডি-র মতো এজেন্সিগুলিকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে দিতে হবে। এজেন্সির রুল থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। তুঘলকি কায়দায় সরকার চলছে। যা চলছে দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। স্ট্যালিন, হিটলার, মুসোলিনির আমলেও এমনটা হয়নি। দু’জন ব্যক্তির অঙ্গুলিহেলনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি কাজ করে থাকে। সংস্থাগুলির কাজে হস্তক্ষেপ না করে শুধুই সংস্থার কর্মীদের বেতন দেওয়ার কাজটুকু করুক কেন্দ্র। বিরোধীদের অপদস্থ করছে এই সরকার। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে ফেলেছে। সব ব্যাপারে এজেন্সি ব্যবহার করে তুঘলকি কায়দায় সরকার চালাতে চাইছে কেন্দ্র। তবে সব এজেন্সি খারাপ, আমি বলছি না। ওরা ঠিক করে কাজ করতে পারছে না। কারণ, দু’জনের হাতে অটোনমি রয়েছে। এ রকম নিকৃষ্টমানের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ স্ট্যালিন, হিটলার আর মুসোলিনিও করেনি। আমি আবার দেশকে ভালবাসি। কিন্তু যা চলছে, তা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। ক্ষমতায় এসে এ ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা উচিত নয়। এজেন্সিগুলিকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে দিতে হবে।