জেলা

‘আমি বার বার বলি ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার, সেটা সবাই মেনে চলুন’, হনুমান জয়ন্তীর প্রাক্কালে শান্তির বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

পূর্ব মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে দুইবার আশঙ্কার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। প্রশাসন সহ সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছিলেন। একইসঙ্গে বাংলার বুকে সম্প্রীতি রক্ষার ডাকও দেন। এবার তিনি হনুমান জয়ন্তীর আগে দিলেন শান্তির বার্তা। তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত পোহালেই হনুমান জয়ন্তী। তার আগে শান্তিপূর্ণভাবে তা পালনের বার্তা মুখ্যমন্ত্রী দিলেন দিঘার প্রেস ক্লাব থেকে। এদিন সেখান থেকেই তিনি জানান, ‘রমজান মাস চলছে। নববর্ষ আসছে। আগামিকাল হনুমান জয়ন্তী। শান্তিতে ভাল করে সব কিছু পালন করুন। শান্তিতে পালন করলে কোনও অসুবিধা হয় না। বাংলা শান্তির জায়গা। বাংলায় সব ধর্ম, সব উৎসব সবাইকে সম্মান করি। সবার উৎসবে সবাই যেন মিলিত হতে পারি। সবার কাছে যেন শান্তির প্রার্থনা করতে পারি। আমি বার বার বলি ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। সেটা সবাই মেনে চলুন।’ উল্লেখ্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলাস সফরে গিয়ে প্রথমে খেজুরির সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ও পরে দিঘার দলীয় মঞ্চ থেকে গেরুয়া শিবিরকে লক্ষ্য করে রীতিমত আক্রমণে শানান তিনি। পাশাপাশি রামনবমীর মতো হনুমানজয়ন্তীতেও তিনি রাজ্যে অশান্তির আশঙ্কা ব্যক্ত করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমি প্রশাসন ও আমাদের ছেলেমেয়েদের বলছি ৬ তারিখ সতর্ক থাকবেন। আমরা বজরংবলীকে সবাই সম্মান করি। কিন্তু তা নিয়ে কোনও হিংসা যেন না হয়।’ যেকোনও ধরনের অশান্তি রুখতে যুবসমাজকে এগিয়ে আসারও বার্তা দিয়েছিলেন। অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে কলকাতা হাইকোর্টও হনুমান জয়ন্তীর মিছিল নিয়ে কড়া নির্দেশ জারি করেছে। বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে রাজ্যজুড়ে মিছিলের ২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে নবান্নে। এ প্রসঙ্গে হাইকোর্ট সাফ জানিয়েছে, যে সমস্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে সেখানে হনুমান জয়ন্তী মিছিল করা যাবে না। এই শোভাযাত্রা নিয়ে কোনও রাজনৈতিক নেতা কোথাও কোনও বক্তব্য পেশ করবেন না। এই নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে।অন্যদিকে এদিন আদালতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, রামনবমী এবং হনুমান জয়ন্তী রাজ্যে পালিত হওয়া সাধারণ উৎসবের মধ্যে পরে না। শেষ ৫ বছর ধরে এটা শুরু হয়েছে। একাধিক অপরিচিত সংগঠন অনুমতি চাইছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্য আদালতে একাধিক প্রস্তাব দেয়। জানানো হয়, মিছিল বা শোভাযাত্রা যদি প্রশাসনের কোন শর্ত উলঙ্ঘন করে তাহলে তার দায় সেই প্রতিষ্ঠান এবং তার আধিকারিকদের ওপর বর্তাবে। কতজন শোভাযাত্রায় থাকবেন তা আগে থেকে পুলিশকে জানাতে হবে। শোভাযাত্রা শুরু এবং শেষ নির্দিষ্ট সময়ে করতে হবে। শোভাযাত্রার রুট ব্যারিকেড করার পরামর্শ দিয়েছিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই পরামর্শ মানা সম্ভব নয় বলে আদালতে জানিয়েছে রাজ্য। তবে স্পর্শকাতর এলাকায় ব্যারিকেড করা হবে বলে জানিয়েছিল রাজ্য। স্পর্শকাতর এলাকায় সিসিটিভি বসানো হবে। মিছিলের শুরু এবং শেষপ্রান্তে পুলিশ থাকবে। তারা আরও জানায়, হনুমান জয়ন্তী করার হলে পরের বছর থেকে ১৫ দিন আগে অনুমতি চাইতে হবে। শেষ ৫ বছর ধরে যারা এই শোভাযাত্রা করছেন শুরু তাঁরাই অনুমতি পাবেন।